শুষ্ক মৌসুমে হঠাৎ খরস্রোতা ফুলজোড় নদী, আতঙ্কে স্থানীয়রা

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে হঠাৎ খরস্রোতা হয়ে উঠেছে ফুলজোড় নদী। আজ সকালে নলকা ইউনিয়নের ফরিদপুর অংশেছবি: প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ফুলজোড় নদী। শুষ্ক মৌসুমে সাধারণত পানি কমতে থাকায় এতে স্রোত একেবারে থাকেই না বললেই চলে। কিন্তু নদীর নলকা ইউনিয়নের ফরিদপুর অংশে হঠাৎ করেই খরস্রোতের সৃষ্টি হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের ধারণা, উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে নদীর এ অংশে এমন অবস্থা হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, নদীতে খননযন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলন করায় উজানের পানি নামতে গিয়ে এমন স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১০টার দিকে উপজেলার জিআর কলেজসংলগ্ন একটি ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, স্রোতের শব্দ অনেক দূর থেকে শোনা যাচ্ছে। মনে হয়, পাহাড়ি কোনো নদী বয়ে যাচ্ছে আশপাশে।

স্থানীয় বাসিন্দা ইমরুল হাসান জানান, নলকা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামকে আলাদা করেছে ফুলজোড় নদী। নদীর পূর্ব অংশের মানুষ নৌকা অথবা বাঁশের সাঁকো পার হয়ে পশ্চিম অংশ দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় চলাচল করেন। কিন্তু এবারের শুষ্ক মৌসুমে নদীতে খরস্রোতের কারণে রশি ধরে নৌকায় পারাপার বন্ধ হয়ে গেছে। বাঁশ ও কাঠের তক্তা বিছিয়ে বানানো সাঁকোটিও ভেঙে গেছে। বিকল্প আরেকটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে এলাকার মানুষ। এ সময়ে নদীর এমন রূপ আগে কেউ দেখেনি।

সেখান থেকে একটু এগিয়ে জানা যায়, স্থানীয় কয়েকজন মৎস্যজীবী নদী থেকে মাছ ধরতে কয়েক দিন আগে বাঁশের তৈরি ফাঁদ বসিয়েছিলেন। কিন্তু তীব্র স্রোতের কারণে মাছ ধরার কথা বাদ দিয়ে বাঁশ ও জাল বাঁচাতে সেগুলো তুলে ফেলছেন তাঁরা। মৎস্যজীবী মনোতোষ হালদার জানান, শীতের এ সময় মাছ ধরতে প্রতিবছরই বাঁশের তৈরি ফাঁদ বসান। কিন্তু এবারে হঠাৎ নদীতে প্রচণ্ড স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে।

গ্রামটির পঞ্চাশোর্ধ্ব গৃহবধূ এছাতন বেগমও একই কথা জানালেন। বললেন, নদীর এমন খেয়ালি রূপ কখনো দেখেননি। বুলবুলি খাতুন বলেন, ‘এমন স্রোত দেখে নদীত নামা বাদ দিছি।’

স্থানীয় একটি উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী লাকী খাতুন বলেন, সবাই বলাবলি করছে, নদীতে মেশিন (খননযন্ত্র) দিয়ে বালু উত্তোলন করায় উজানের পানি নামতে গিয়ে এমন স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে।

তবে সরেজমিনে তদন্তের পর আসল কারণ জানা যাবে বলে মন্তব্য করেছেন উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোছা. খাদিজা খাতুন। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি। কেন এমন হলো, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এবং সরেজমিন তদন্ত করে বলা যাবে।’