নড়াইলে সহকর্মীকে হত্যার দায়ে ২ জনের যাবজ্জীবন
নড়াইলে জাহাজের সুকানি সাব্বির হোসেনকে (৪৫) হত্যার দায়ে তাঁর দুই সহকর্মীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া আরেক আসামিকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাঁদের প্রত্যেককে বিভিন্ন অঙ্কের অর্থ জরিমানা ও অনাদায়ে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে নড়াইলের অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. শাহজাহান আলী এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন পটুয়াখালী সদর উপজেলার চামটা গ্রামের ফারুক হোসেন খান ও পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠির রফিকুল ইসলাম। সাজাপ্রাপ্ত আরেক আসামি সাজ্জাদ হোসেন রাজধানী ঢাকার দারুস সালাম এলাকার বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তাঁরা সবাই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) তারিকুজ্জামান লিটু প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে পরিকল্পিতভাবে সাব্বিরকে হত্যা করা হয়। খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তাঁকে হত্যার পর জাহাজ থেকে নদীতে ফেলে দেওয়ার দায়ে তাঁর দুই সহকর্মীর যাবজ্জীবন ও একজনের সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর মামলায় সম্পৃক্ততা না থাকায় একজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
মামলার সূত্রে জানা যায়, মেহেরিন সাদ নামের একটি জাহাজে সুকানির কাজ করতেন পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠি এলাকার সাব্বির। ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুরে পিরোজপুর থেকে জাহাজটি রাজধানী ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। পথে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নড়াগাতি থানার বড়দিয়া ঘাটে অবস্থানের সময় সাব্বিরের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর শেষবার কথা হয়। এরপর রাত আটটার পর থেকে সাব্বিরের মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। জাহাজের অন্য সহকর্মীদের নম্বরে ফোন দিলে সেগুলোও বন্ধ পায় সাব্বিরের পরিবার। এরপর ৩ অক্টোবর নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নড়াগাতি থানার ডুমুরিয়া এলাকায় মধুমতী নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় একটি লাশ উদ্ধারের খবর পান পরিবারের লোকজন। পরে পুলিশের কাছে লাশের ছবি দেখে সাব্বিরের মরদেহটি শনাক্ত করা হয়।
এ ঘটনায় সাব্বিরের শ্যালক মহিদুল বাদী হয়ে জাহাজটিতে কর্মরত ফারুক, রফিকুল, সাজ্জাদ ও শহিদুলের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও তিন–চারজনকে আসামি করে নড়াগাতী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।