মুরগির খাদ্যের দাম কমানোসহ চার দফা দাবি পোলট্রিশিল্প অ্যাসোসিয়েশনের
মুরগির খাদ্যের মূল্য ও বাচ্চার দাম কমানো এবং করপোরেট কোম্পানির রেডি মুরগি ও ডিম উৎপাদন বন্ধ করাসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রান্তিক পোলট্রিশিল্প রক্ষা অ্যাসোসিয়েশন। দাবি মানা না হলে জানুয়ারি থেকে পোলট্রি খামার বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় বাংলাদেশ প্রান্তিক পোলট্রিশিল্প রক্ষা অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা ওই ঘোষণা দেন। সভায় সংগঠনের গাজীপুর জেলা শাখার কমিটি গঠন করা হয়।
প্রান্তিক পোলট্রি খামারি মো. সিরাজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ প্রান্তিক পোলট্রিশিল্প রক্ষা অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম মল্লিক। বক্তব্য দেন সংগঠনের সহসভাপতি শাহিনুর ইসলামসহ কয়েকজন প্রান্তিক খামারি।
খামারিরা জানান, একটি মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করতে হ্যাচারিমালিকদের সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ টাকা খরচ হয়। অথচ এ মুরগির বাচ্চা খামারিদের কিনতে হয় ৭০ থেকে ৮০ টাকা দিয়ে। অনেক সময় ১০০ থেকে ১২০ টাকা দিয়েও বাচ্চা পাওয়া যায় না। মুরগির বাচ্চা থেকে হ্যাচারিমালিকেরা বিপুল টাকা আয় করে থাকেন। অতিরিক্ত লাভ না করে যদি সহনীয় দামে হ্যাচারিমালিকেরা মুরগির বাচ্চা বিক্রি করতেন, তাহলে খামারিরা আরও বেশি লাভ হতো। অন্যদিকে বাচ্চা ও খাদ্য উৎপাদনকারী করপোরেট কোম্পানিগুলো এ ব্যবসার পাশাপাশি মুরগি ও ডিম উৎপাদন করে, যা আইন পরিপন্থী। ফলে তারা খুব সহজেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে নিজেদের মধ্যে সিন্ডিকেট তৈরি করে থাকে। তাই হ্যাচারি ও ফিড উৎপাদনকারী করপোরেট কোম্পানিগুলোকে মুরগি ও ডিম উৎপাদন থেকে বিরত রাখতে হবে।
খামারিরা আরও জানান, পোলট্রি ফিডের প্রধান উপাদান ভুট্টার দাম কমলেও খাবারের দাম কখনো কমানো হয় না। অন্যদিকে ঢাকার কাপ্তানবাজার ও কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন আড়তের ডিম ব্যবসায়ীরা আগের দিন রাতে ডিমের দাম নির্ধারণ করে থাকেন। খামারিরা বলেন, ডিম উৎপাদন করেন খামারের মালিকেরা অথচ তার দাম নির্ধারণ করেন ডিম ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সদস্যরা। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং খামারিদের জন্য বেদনাদায়ক। এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া দরকার।
অনুষ্ঠানে প্রান্তিক খামারিরা চার দফা দাবি পেশ করেন। এ দাবিগুলো হচ্ছে ব্রয়লার মুরগির খাদ্যের ৫০ কেজির বস্তার দাম ২০০০ থেকে ২ হাজার ১০০ টাকার মধ্যে এবং লেয়ার সোনালি মুরগির খাদ্যের দাম ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকার মধ্যে আনা। খাবারের মান উন্নত করা। সব ধরনের মুরগির বাচ্চার দাম ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে আনা। মুরগির খাদ্য ও বাচ্চা উৎপাদনকারী করপোরেট কোম্পানির রেডি মুরগি ও ডিম উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। প্রতিটি উপজেলায় ৩০০ জন ব্রয়লার, লেয়ার ও সোনালিসহ সব ধরনের মুরগির খামারিকে অন্তত তিন লাখ টাকার সহজ শর্তে স্বল্প সুদে ব্যাংকঋণ দিতে হবে।
মফিজুল ইসলাম বলেন, তাঁদের দাবি পূরণ না হলে সারা দেশের সব খামারের উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হবে।