সন্দ্বীপে নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্ট ঘেরাওয়ের চেষ্টা, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার মৃত্যু

নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্ট ঘেরাওয়ের চেষ্টার সময় মারা যাওয়া মো, শরীফছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে যুবদলের দুই কর্মীকে আটকের প্রতিবাদে উপজেলা পরিষদ–সংলগ্ন নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্ট ঘেরাওয়ের চেষ্টার সময় মো. শরীফ (৩২) নামের স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতার মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ বেলা একটার দিকে আজিমপুর ও রহমতপুর ইউনিয়নে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের অভিযানে যায় নৌবাহিনীর একটি দল। ওই সময় আবু তাহের (৪২) ও মো. খোকন (৪০) নামে যুবদলের দুই কর্মীকে আটক করা হয়। তাঁদের আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে সন্ধ্যার পর থেকে উপজেলা পরিষদ–সংলগ্ন মান্নান মার্কেটের সামনে কয়েকশ নারী-পুরুষ উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ করেন। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ তাঁরা মিছিলসহ নৌবাহিনী কন্টিনজেন্টের দিকে রওনা দিলে নৌবাহিনীর সদস্যরা তাঁদের বাধা দেন। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ লোকজনকে নিবৃত্ত করতে নৌবাহিনী সদস্যরা লাঠিপেটা করেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। এ সময় মো.শরীফসহ কয়েকজন আহত হন।

ঘটনাস্থল থেকে শরীফকে কয়েকজন ব্যক্তি  উদ্ধার করে পাশের সন্দ্বীপ মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. রায়হান বলেন, রাত আটটার দিকে কয়েকজন ব্যক্তি শরীফকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এ সময় পরীক্ষা করে দেখা যায়, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর কারণ কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁর শরীরে বাহ্যিকভাবে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাননি। ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে মৃত্যুর কারণ। এ ছাড়া এই হাসপাতালে হাতে আঘাত পাওয়া তিনজনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানান চিকিৎসক।

নিহত মো. শরীফ পেশায় অটোরিকশাচালক। তিনি আজিমপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এ ব্যাপারে জানতে সন্দ্বীপ নৌবাহিনী কন্টিনজেন্টের দায়িত্বরত এক কর্মকর্তার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে পারব না।’ এরপর পরিচয় না দিয়েই তিনি ফোন কেটে দেন।

সন্দ্বীপ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু তাহেরও প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, ‘এ মুহূর্তে কিছু বলার মতো অবস্থা নেই। পরে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি অবগত করা হবে।’

সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিগ্যান চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘নৌবাহিনী অবৈধ অস্ত্র রাখার সংবাদ পেয়ে দুই ব্যক্তিকে আটক করলে প্রায় দুই থেকে আড়াই শ নারী-পুরুষ সমবেত হয়ে কন্টিনজেন্টের সামনে চলে গেলে নৌবাহিনী পক্ষ থেকে তাঁদের প্রতিনিধি ঠিক করে আলাপ করতে বলা হয়। তাঁরা সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। কিন্তু কীভাবে আহত বা নিহত হওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে, তা নিশ্চিত হতে পারিনি। নৌবাহিনী বলেছে, তাঁরা এমন কিছু করেনি।’