বরিশালের উজিরপুর
সাঁকো দিয়ে সেতুতে ওঠানামা
উজিরপুরের বরাকোঠা ইউনিয়নের একটি খালের ওপর ২০২১ সালে একটি সেতু ও এর দুই পাশে সড়ক নির্মাণ করার কথা। কিন্তু এখনো সড়কের কাজ শেষ হয়নি।
বরিশালের উজিরপুরের বরাকোঠা ইউনিয়নের ধামুরা থেকে শের–ই–বাংলা বাজার পর্যন্ত খালের ওপর সেতু ও এর দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ চার মাসে শেষ করার কথা। কিন্তু সেতু নির্মাণ করা হলেও এখনো দুই পাশের সড়কের কাজ শেষ হয়নি। এই সেতুতে কাঠের সাঁকো দিয়ে ওঠানামা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এভাবে চলাচল করতে গিয়ে উপজেলার ধামুরা, বরাকোঠা ও উত্তর বরাকোঠা গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে উজিরপুর উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০২১-২২ অর্থবছরে উজিরপুরের বরাকোঠা ইউনিয়নের ধামুরা থেকে শের–ই–বাংলা বাজার পর্যন্ত খালের ম হাকিম ডাক্তারের বাড়ির সামনে একটি আরসিসি সেতু ও এর দুই পাশে ৫০০ মিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণে ৯০ লাখ ২৮ হাজার ৪৮৭ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। ২০২১ সালের জুলাই মাসে এ কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে মেসার্স মৌ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ করার কথা ছিল।
স্থানীয় কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজের শুরুতেই অনিয়ম ও গাফিলতি করে। তিন মাসে কাজটি শেষ করার কথা থাকলেও দুই বছরেও শেষ হয়নি। সেতু নির্মাণের আগে এলাকাবাসী ও পথচারী যাতায়াতের জন্য বিকল্প সড়ক নির্মাণ করার কথা থাকলেও ঠিকাদার তা না করে পুরোনো সেতুটি ভেঙে ফেলেন। এতে সেতু নির্মাণকালীন সময়ে প্রায় তিন মাস পথচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। আবার সেতু নির্মাণকাজ শেষ করার পর সেতুর দুই পাশে মাটি ফেলে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, বরাকোঠা ইউনিয়নের হাকিম ডাক্তারের বাড়ির সামনে সেতু নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। সেতুর দুই পাশে চলাচলের জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা কাঠের সাঁকো তৈরি করে তা বসিয়েছেন।
এ সময় উত্তর বরাকোঠা গ্রামের মতিয়ার রহমান সরদার (৭০) ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ঠিকাদারের তিন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও দুই বছরেও শেষ করতে পারেননি। ঠিকাদারের খামখেয়ালি, অনিয়ম ও গাফিলতির কারনে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন তিন গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। ঠিকাদার সড়কের কাজ না করে হঠাৎ পুরোনো সেতু ভেঙে ফেলেন। যাতায়াতের বিকল্প ব্যবস্থা না করে সেতুর কাজ শুরু করায় আমরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছি। ’
বরাকোঠা গ্রামের আবদুর রহমান সিদ্দিকী (৪৫) বলেন, ‘দুই বছর আগে সেতু করে সেতুর গোড়ায় মাটি না দিয়ে ফেলে রাখেন ঠিকাদার। আমরা সেতুর ওপর দিয়ে চলাচলের জন্য কাঠের সাঁকো নির্মাণ করেছি। চলতি বর্ষা মৌসুমে সাঁকো থেকে পা পিছলে পড়ে গিয়ে শিশু, বৃদ্ধসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।’
সেতুর দুই পাশের সড়ক নির্মাণের কাজ শেষ না করার অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মৌ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী তন্ময়ের মুঠোফোনে কয়েকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি। তবে এ বিষয়ে সেতু ও সড়ক নির্মাণের কাজ দেখভালের দায়িত্বে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মিজানুর রহমান বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনো অনিয়ম বা গাফিলতি হয়নি।