আশুলিয়ায় সেনাবাহিনীর আশ্বাসে দুই দিন পর মহাসড়ক ছাড়লেন শ্রমিকেরা

বার্ডস গ্রুপের শ্রমিকেরা নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল এলাকা অবরোধ করে রাখলে তীব্র যানজট তৈরি হয়। পরে সেনাবাহিনীর আশ্বাসে তাঁরা মহাসড়ক ছেড়ে দেন। আজ বুধবার সকালে তোলাছবি: প্রথম আলো

ঢাকার অদূরে সাভারের আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করা বার্ডস গ্রুপের চারটি কারখানার শ্রমিকেরা দুই দিন পর সেনাবাহিনীর আশ্বাসে মহাসড়ক ছেড়ে দিয়েছেন।

বকেয়া বেতনসহ শ্রমিক-কর্মচারীদের সার্ভিস বেনিফিট ও ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওনা টাকা পরিশোধের দাবিতে গত সোমবার থেকে শ্রমিকেরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিলেন।

আজ বুধবার দুপুরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা সমস্যা সমাধানে কারখানার মালিককে শ্রমিকদের সামনে হাজির করার আশ্বাস দিলে শ্রমিকেরা সড়ক ছেড়ে দিয়ে কারখানার সামনে অবস্থান নেন।

আরও পড়ুন

বার্ডস গ্রুপের একটি কারখানার এক শ্রমিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকালে সেনাবাহিনী আসছিল। তারা আমাদের বলেছে, সেনাবাহিনী আপনাদের সাথে আছে। আপনাদের মালিক পলাতক আছে, তাকে খোঁজার চেষ্টা চলছে। আমাদের দাবিদাওয়া পূরণের ব্যাপারে তারা আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তাদের প্রতিশ্রুতিকে সম্মান জানিয়ে আমরা মহাসড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করেছি। যদি এই প্রতিশ্রুতি না মানা হয়, তবে আমরা আবারও অবরোধ করব।’

পুলিশ ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত রোববার বার্ডস গ্রুপের পক্ষ থেকে শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধের জন্য তিন মাসের সময় বর্ধিতকরণের নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে বকেয়া পরিশোধ করতে তিন মাস সময় চায়। নোটিশের পর শ্রমিকেরা বকেয়া পাওনার দাবিতে বাইপাইলে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে যানজটে পড়ে মহাসড়কে চলাচলকারী ব্যক্তিরা ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন। আজ দুপুরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা গিয়ে শ্রমিকদের আশ্বাস দিলে তাঁরা মহাসড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন।

আরও পড়ুন

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আহম্মদ মুঈদ প্রথম আলোকে বলেন, দুপুরের দিকে আন্দোলনরত শ্রমিকেরা সড়ক থেকে সরে যান। তাঁদের যৌক্তিক দাবিগুলো পূরণে বিষয়টি নিয়ে কারখানার মালিক ও শ্রমিক উভয়ের আলোচনা প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যেই সেনাবাহিনীকে নিয়ে মালিককে শ্রমিকদের সামনে উপস্থিত করার ব্যাপারে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। দ্রুতই কারখানার মালিককে শ্রমিকদের সামনে নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া হবে। আশা করছেন, উভয় পক্ষ আলোচনা করে সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান করবে।

এদিকে আশুলিয়ার অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানা খোলা আছে। আজ দুপুরে তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ থেকে জানানো হয়েছে, সাভার ও আশুলিয়ার ২৭২টি পোশাক কারখানার মধ্যে আঞ্জুমান ডিজাইন লিমিটেড কারখানাটি বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬–এর ১৩(১) ধারায় বন্ধ আছে।

আরও পড়ুন

এ ছাড়া সবেতন ছুটি কিংবা শ্রমিকেরা কারখানায় উপস্থিত হয়ে কাজ বন্ধ রেখেছেন অথবা শ্রমিকেরা চলে গেছেন স্কাইলাইন গার্মেন্টস লিমিটেড, স্কাইলাইন অ্যাপারেলস লিমিটেড, জেনারেশন নেক্সট লিমিটেড, এআর জিন্স প্রডিউসার লিমিটেড, টেক্সট টাউন লিমিটেডসহ ৩২টি কারখানার। এখনো আগস্ট মাসের বেতন পরিশোধ করেননি একটি কারখানার মালিক।