অর্থমন্ত্রীকে আবারও নির্বাচনে জয়ী করার অনুরোধ নাঙ্গলকোট থানার ওসির
অর্থমন্ত্রী ও কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট, সদর দক্ষিণ ও লালমাই) আসনের সংসদ সদস্য আ হ ম মুস্তফা কামালকে আবারও নির্বাচনে জয়ী করতে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফারুক হোসেন।
গতকাল মঙ্গলবার ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ বক্তব্য দেন। ওসির ৩৯ সেকেন্ডের ওই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সরকারি কর্মকর্তা হয়ে ওসি এ ধরনের বক্তব্য দিতে পারেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
নাঙ্গলকোট থানার ওসি মো. ফারুক হোসেন আলোচনা সভায় বলেন, ‘নাঙ্গলকোট উপজেলার মানুষ গণহারে, গণমানুষের মতো করে ওনাকে (অর্থমন্ত্রী) আবার নির্বাচিত করবেন। এটা আমার মনের দিক থেকে আপনাদের প্রতি মিনতি। মাননীয় অর্থমন্ত্রী এত বেশি নাঙ্গলকোটে উন্নয়ন করেছেন...।
আমি যদি পূর্বের ইতিহাস শুনি, নাঙ্গলকোটে অনেক জায়গায় রাস্তাঘাটও ছিল না, বিদ্যুৎ ছিল না। উনি যখন আসলেন, আপনার মন জয় করলেন এবং আপনাদেরকে উন্নয়নের শিখরে পৌঁছে দিলেন। সব আপনাদের জন্যই করেছেন।’
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর থেকে এই আসনের সংসদ সদস্য। তিনি ২০১৪ সালে পরিকল্পনামন্ত্রী এবং ২০১৮ সালে অর্থমন্ত্রী হন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে নাঙ্গলকোট উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রায়হান মেহবুব এতে সভাপতিত্ব করেন। এতে নাঙ্গলকোট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন, ভাইস চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ভূঁইয়াসহ সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ওসি মো. ফারুক হোসেন আজ বুধবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন নিয়ে কথা বলেছি। একপর্যায়ে উন্নয়নের স্বার্থে ওই বক্তব্য দিয়েছি। এখন আমি কী বলব? আমার বক্তব্যকে এখন অন্যভাবে ছড়ানো হচ্ছে। আমার এক আত্মীয় মারা গেছেন। আমি সেখানে আছি। এর বেশি কিছু বলতে পারব না। মন খারাপ।’
এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কুমিল্লার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম বলেন, এটা চাকরিবিধি লঙ্ঘন। সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী এভাবে কোনো বক্তব্য দিতে পারেন না। এটা তাঁর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। নির্বাচন এলে ভোটাররা কাকে নির্বাচিত করবেন, এটা তাঁদের ব্যাপার। কারও মৌলিক অধিকার নিয়ে এই পর্যায়ে থেকে ওসি এটা বলতে পারেন না। তিনি কেন মিনতি করবেন? তাঁর দায়িত্ব কী?
তিনি কী করবেন, কোথায় কী বলবেন—এগুলো তাঁকে বুঝতে হবে। এ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নানের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি সাড়া দেননি।