পশুর হাট বসানো নিয়ে পুলিশ–জনতা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ফাঁকা গুলি
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে কোরবানির পশুর হাট বসানোকে কেন্দ্র করে পুলিশ-জনতা পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশসহ অন্তত আটজন আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ শটগানের তিনটি গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আজ বুধবার বিকেলে উপজেলার মজুমদার বাজারে এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে মজুমদার এলাকায় সাধারণ বাজার বসছে। কোরবানি উপলক্ষে বুধবার পশুর হাট বাসানো হয়। অবৈধভাবে পশুর হাট বসানোর অভিযোগ পেয়ে পুলিশ বিকেলে ঘটনাস্থলে যায়। তারা পশুর হাট পণ্ড করে দেওয়ার চেষ্টা করে। এতে ইজারাদারের লোকজন ও স্থানীয় কিছু মানুষ বাধা দেন। একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। এতে ছোটাছুটি করার সময় পুলিশসহ অন্তত আটজন আহত হন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শটগানের তিনটি গুলি ছোড়ে।
বাজারের ব্যবসায়ীদের দাবি, পুলিশ অন্যায়ভাবে বাজারে প্রবেশ করে পশুর হাট পণ্ড করে দেয়। এতে কয়েকটি গরু ও ছাগল হারিয়ে যায় এবং অনেকের টাকাপয়সা ও হাতে থাকা ফোন খোয়া গেছে।
তবে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুব আলম বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ বিভিন্ন মহলের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কোরবানির পশুর হাট না বসানোর জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু ইজাদারের লোকজন ও কতিপয় জনতা পুলিশের সরকারি কাজে বাধা দেয় এবং কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে মারধর করেন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শটগানের তিনটি গুলি ছোড়া হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত।
জানতে চাইলে মজুমদার বাজারের ইজারাদার ওবাইদুল ইসলাম দাবি করেন, পশুর হাট বসানোর ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ নেই, সে কারণে বাজারে পশুর হাট বসানো হয়েছে। তারপরও কেন পশুর হাট বসানো যাবে না, সে মর্মে হাইকোর্টের একটি লিগ্যাল নোটিশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) দেওয়া হয়েছে। এর পরও পুলিশ বেআইনিভাবে পশুর হাট পণ্ড করে দেয়।
ইউএনও তরিকুল ইসলাম বলেন, মজুমদার বাজারে আগে পশুর হাট ছিল না। সাধারণ ব্যবসায় পরিচালিত হতো। কিন্তু ঈদ সামনে রেখে প্রশাসনের অনুমতি না নিয়েই পশুর হাট বসানো হয়। এ ছাড়া বাজারটি ছোট পরিসরে অবস্থিত। তিনি আরও বলেন, লিগ্যাল নোটিশের বিষয়টি নিয়ে গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি আইনজীবীর (জিপি) মতামতের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে; কিন্তু মতামত না পাওয়ার আগেই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।