জামাতার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করলেন মুক্তাগাছার মেয়র
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলায় যুবলীগ কর্মী আসাদুজ্জামান হত্যার ঘটনায় এবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন মুক্তাগাছা পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বিল্লাল হোসেন সরকার। তিনি দাবি করেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাঁর জামাতা মাহবুবুল আলম ওরফে মনিরের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
আজ রোববার দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন বিল্লাল হোসেন সরকার। তিনি বলেন, ‘যুবলীগ কর্মী আসাদুজ্জামানকে পারিবারিক কারণে হত্যা করা হয়েছে বলে আমার ধারণা। তবে এ হত্যাকাণ্ডকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে রাজনৈতিক সুবিধা আদায় করতে মুক্তাগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হাই আকন্দসহ একটি মহল সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদসহ আমাদের ওপর দোষারোপ ও অপপ্রচার করে যাচ্ছে।’
যুবলীগ কর্মী আসাদুজ্জামান হত্যার বিষয়ে এর আগে গত বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন মুক্তাগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাই আকন্দ। তিনি দাবি করেন, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের পৃষ্ঠপোষকতায় মেয়র বিল্লাল হোসেনের নির্দেশে মেয়রের জামাতা মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বে হত্যা করা হয় আসাদুজ্জামানকে। তবে ওই দিনই প্রতিমন্ত্রী এ অভিযোগ অস্বীকার করেন।
গত ২৮ আগস্ট রাতে মুক্তাগাছা পৌর শহরের আটানি বাজার এলাকায় একটি চায়ের দোকানে চা পান করার সময় কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয় আসাদুজ্জামানকে। পরে ওই রাতেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আসাদুজ্জামান। এ ঘটনায় নিহত আসাদুজ্জামানের ছেলে তাইব হাসান বাদী হয়ে শুক্রবার মুক্তাগাছা থানায় ৩০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলনে আবদুল হাই আকন্দ দাবি করেন, মামলায় মেয়র বিল্লাল হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। তবে শুক্রবার মেয়রকে বাদ দিয়েই মামলা করা হয়।
আজ সংবাদ সম্মেলনে মেয়র বিল্লাল হোসেন দাবি করেন, আসাদুজ্জামান হত্যার রাতে তিনি সাবেক ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমানের জানাজায় অংশ নিতে ময়মনসিংহ শহরে ছিলেন। ওই রাতে তাঁর মেয়ে ময়মনসিংহ নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। জানাজা শেষ করে তিনি ওই বেসরকারি হাসপাতালে যান। সেখানে তখন জামাতা মাহবুবুল আলমসহ মামলার আরও একাধিক আসামি ছিলেন। আসাদুজ্জামানকে যখন কোপানো হয়, তখন জামাতা মাহবুবুল যে ওই হাসপাতালে ছিলেন, এমন ভিডিও ফুটেজও তিনি সংগ্রহ করেছেন। অথচ আসাদুজ্জামান হত্যা মামলায় তাঁকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। মেয়রের আহ্বান, আসাদুজ্জামান হত্যা মামলার প্রকৃত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হোক। পাশাপাশি তাঁদের হয়রানি করা বন্ধ হোক।
স্থানীয় ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, মুক্তাগাছা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে দুটি পক্ষ। একটি পক্ষের নেতৃত্বে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। তাঁর পক্ষে আছেন মুক্তাগাছা পৌরসভার মেয়র বিল্লাল হোসেন সরকার ও বিল্লাল হোসেন সরকারের জামাতা মাহবুবুল আলম ওরফে মনি। অপর একটি অংশের নেতৃত্বে আছেন মুক্তাগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হাই আকন্দসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক একাধিক নেতা।