বাগেরহাটে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলায় যৌতুকের টাকার জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন করে হত্যার দায়ে বাসুদেব কর্মকার ওরফে বাপ্পি নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার বিকেলে বাগেরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল প্রথম আদালতের বিচারক এস এম সাইফুল ইসলাম এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া বাসুদেব কর্মকার কচুয়া উপজেলার গজালিয়া গ্রামের বাবুল কর্মকারের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মামলার অন্য চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁদের খালাস দিয়েছেন আদালত।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহার সূত্রে জানা গেছে, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার চরকাছারিয়া গ্রামের সুবোধ কুমারের মেয়ে সেতু রানিকে তুলে নিয়ে বিয়ে করেন আসামি বাসুদেব। ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বসবাসের পর একপর্যায়ে তাঁরা এলাকায় গিয়ে বসবাস করতে থাকেন। বাসুদেব এলাকায় ফিরে জুয়েলারির দোকান দেন। এ সময় স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য চাপ দেন। স্ত্রীও বাবার বাড়ি থেকে কয়েক দফা টাকা এনে দেন। ২০১৬ সালের ৬ আগস্ট স্ত্রীকে বাবার কাছ থেকে আবার আট লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলেন বাসুদেব। কিন্তু স্ত্রী রাজি না হলে তাঁকে নির্যাতন করেন। একপর্যায়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক ওই গৃহবধূকে মৃত ঘোষণা করেন।
সূত্র জানায়, মরদেহ সৎকারের পর ৮ আগস্ট কচুয়া থানায় মামলা করতে যান নিহত সেতুর বাবা সুবোধ কুমার। কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে ২ সেপ্টেম্বর তিনি আদালতে একটি মামলা করেন। ২০২০ সালের ৪ মার্চ তদন্ত শেষে সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পিবিআই। আদালত নয়জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সিদ্দিকুর রহমান রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, প্রধান আসামির বিরুদ্ধে সন্দেহাতীতভাবে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অন্য আসামিদের খালাস দিয়েছেন আদালত।