১০ বছরে হাসানুল হক ইনুর নগদ টাকা বেড়েছে প্রায় ৫২ গুণ
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনুর কাছে নগদ টাকা ছিল ৬ লাখ ৮৫ হাজার। এখন তাঁর কাছে নগদ টাকা আছে ৩ কোটি ৫৬ লাখ ১৫৫ টাকা। অর্থাৎ, ১০ বছরের ব্যবধানে তাঁর নগদ টাকা বেড়েছে প্রায় ৫২ গুণ। এ ছাড়া তাঁর স্ত্রী আফরোজা হকেরও নগদ টাকা বেড়েছে।
হাসানুল হক ইনু কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। এর মধ্যে একবার সরকারের তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেওয়া হলফনামা এবং দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা পর্যালোচনা করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
হলফনামায় দেওয়া তথ্যমতে, ইনুর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ আছে গাড়ি বিক্রির ১ কোটি ৫৮ লাখ ১৫৫ টাকা ও ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। গত নির্বাচনের সময় নগদ ছিল ৫০ লাখ ৬৬ হাজার ৩৮৬ টাকা। আর ১০ বছর আগে নির্বাচনের সময় ছিল মাত্র ৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। এবার তাঁর ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ১৪ লাখ ৮৪ হাজার ৯২৪ টাকা, ৫ বছর আগে ছিল ৪৪ লাখ ৫১ হাজার ৪৮০ টাকা। ১০ বছর আগে ছিল ৩৬ লাখ ৭০ হাজার ১৫৬ টাকা।
ইনুর স্ত্রী আফরোজা হকের নগদ টাকা বেড়েছে আরও বেশি। এখন তাঁর নগদ টাকা আছে ১ কোটি ৬১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৪৩ টাকা। ৫ বছর আগে ছিল ৬০ লাখ ৩ হাজার ২৫৮ টাকা। আর ১০ বছর আগে ছিল মাত্র ৬ লাখ ৩৮ হাজার ৯০ টাকা। স্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ১৬ লাখ ৩৭ হাজার ২৭০ টাকা। ৫ বছর আগে ছিল ১৪ লাখ ২৮ হাজার ৬৭৭ টাকা। আর ১০ বছর আগে ছিল মাত্র ৮০ হাজার ৪৯৩ টাকা।
হলফনামায় নিজেকে রাজনৈতিক কর্মী ও প্রকৌশলী হিসেবে উল্লেখ করেছেন হাসানুল হক ইনু। তাঁর ও তাঁর ওপর নির্ভরশীলদের আয়ের মধ্যে কৃষি খাতে কোনো আয় নেই। তাঁর আয়ের বড় অংশ আসে ব্যবসা, বেতন-ভাতা, ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ ও টিভি টক শো থেকে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইনু হলফনামায় ব্যবসা থেকে বার্ষিক ৭ লাখ ৬২ হাজার ১৫৯, বেতন-ভাতা থেকে ২৩ লাখ ৯৬ হাজার ৫৭৫ টাকা এবং টিভি টক শো ও ব্যাংক সুদ থেকে ২ লাখ ১৬ হাজার ৭০ টাকা আয় দেখিয়েছেন। সব মিলিয়ে তাঁর বার্ষিক আয় ৩৩ লাখ ৭৪ হাজার ৮০৪ টাকা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তিনি ৩৪ লাখ ৬১ হাজার ৬২৩ টাকা আয় দেখিয়েছিলেন। ১০ বছর আগে ছিল ২৬ লাখ ৩৬ হাজার ৭৮২ টাকা।
এক দশকে হাসানুল হক ইনুর স্বর্ণালংকার বাড়েনি। ১৯৭৪ সালে উপহার হিসেবে ২৫ ভরি সোনা পেয়েছিলেন। এখনো সেটিই আছে। দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় তা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে তাঁর স্ত্রীর স্বর্ণালংকার বেড়েছে।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় ১৯৭৪ সালে উপহার পাওয়া স্ত্রীর ১২ ভরি সোনার কথা উল্লেখ ছিল। কিন্তু গত নির্বাচনের সময় হলফনামায় দুই ভরি কম দেখানো হয়। যদিও ১৯৭৪ সালে উপহার পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। এবারের হলফনামায় স্ত্রীর সোনা দেখানো হয়েছে ৪০ ভরি। সেখানেও ১৯৭৪ সালে উপহার পাওয়া বলে উল্লেখ করা হয়।
হাসানুল হক ইনুর চার লাখ টাকা দামের একটি জিপ আছে। রাজধানীর পূর্বাচলে ১০ কাঠার একটি প্লট আছে, যার দাম দেখানো হয়েছে ১৬ লাখ ১০ হাজার টাকা। দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায়ও ওই প্লটের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।