বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক (ডিজি) সাকিল আহমেদ বলেছেন, মিয়ানমারের উদ্ভূত পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। অনুপ্রবেশ রোধে সর্বোচ্চ সতর্ক বিজিবি। সীমান্তের ওপার (মিয়ানমার) থেকে ছোড়া প্রতিটি গুলির হিসাব বিজিবির আছে। মর্টার শেল নিক্ষেপ, আকাশসীমা অতিক্রমসহ প্রত্যেকটি ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। মিয়ানমার কূটনৈতিকভাবে উত্তরও পাঠিয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্ত পরিদর্শন করেন বিজিবির ডিজি মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ। তিনি তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, তুইঙ্গাঝিরি, রেজুপাড়া বর্ডার অবজারভেশন পোস্ট (বিওপি) পরিদর্শন করেন। দুপুরে রেজুপাড়া বিওপিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিজিবির মহাপরিচালক।
সীমান্তের ওপারে যতই সংঘর্ষ হোক, তার আঁচ বাংলাদেশ ভূখণ্ডে পড়তে দেওয়া হবে না জানিয়ে বিজিবির মহাপরিচালক বলেন, উত্তপ্ত পরিস্থিতিতেও চেষ্টা চলছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির (বর্ডার গার্ড পুলিশ) সঙ্গে পতাকা বৈঠক করার। ইতিমধ্যে যোগাযোগ হয়েছে। শিগগিরই ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের উচ্চপর্যায়ের পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সীমান্ত পরিস্থিতির সবকিছু নিয়ে মুখোমুখি আলোচনা করা হবে।
টানা ১১ দিন পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গতকাল রোববার রাত থেকে শুরু হয়েছে গুলিবর্ষণ ও থেমে থেমে মর্টার শেলের গোলা নিক্ষেপ। এতে আতঙ্কে আছেন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম, কক্সবাজারের উখিয়া, টেকনাফের পালংখালী ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ। গতকাল রোববার রাত ১১টা থেকে শুরু হয় গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপ। আজ সোমবার সকাল সাড়ে সাতটা পর্যন্ত এ অবস্থা চলে। এ রকম পরিস্থিতিতে তিনি আজ নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্ত পরিদর্শন করেন।
মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজিবি কঠোর অবস্থানে আছে। সীমান্তের ওপারে যে সমস্যা, তা তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। সেটি তারাই বুঝবে।
সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা একাধিক সূত্র জানায়, দুই মাসের বেশি সময় ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পাহাড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির (এএ) লড়াই চলছে। এর ব্যাপ্তি ছড়িয়েছে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্তে। ওপারের মুহুর্মুহু গুলিবর্ষণ, থেমে থেমে মর্টার শেল নিক্ষেপ, রাতে যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার থেকে মর্টারের গোলা নিক্ষেপের ঘটনায় উদ্বিগ্ন এপারের তিনটি ইউনিয়ন ঘুমধুম, পালংখালী ও হোয়াইক্যংয়ের ৩১টি গ্রামের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ। আতঙ্কে এসব গ্রামের মানুষ চাষাবাদ এবং মৎস্য ও কাঁকড়া খামারে যেতে পারছেন না।