মন্দিরের ভেতরে পড়ে ছিল এক ব্যক্তির মরদেহ
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার একটি মন্দিরের ভেতর থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে উপজেলার দরাজহাট ইউনিয়নের দেবীনগর সর্বজনীন শিবমন্দিরের ভেতর থেকে পুলিশ তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে।
ওই ব্যক্তির নাম দীপ মণ্ডল (৩৮)। তিনি খুলনার ফুলতলা উপজেলার বেনেপুকুর গ্রামের বিশ্বনাথ মণ্ডলের ছেলে। তিনি ২২ দিন ধরে এই মন্দিরে সেবায়েতের কাজ করে আসছিলেন।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীপ মণ্ডলের মামার বাড়ি বাঘারপাড়া উপজেলার বাসুয়াড়ি ইউনিয়নের সৈয়দ মাহমুদপুর গ্রামে। এর পাশের গ্রাম দেবীনগর। দীপ মাঝেমধ্যে মামার বাড়িতে বেড়াতে এসে দেবীনগরে আসতেন। তাঁরা জানান, দীপ অনেক দিন ধরে জটিল রোগে ভুগছিলেন। তিনি স্বপ্নে দেখেন, দেবীনগর সর্বজনীন শিবমন্দিরে সেবায়েতের কাজ করলে রোগমুক্তি পাবেন। এ জন্য ৬ ফেব্রুয়ারি তিনি মন্দিরে আসেন। সেই থেকে তিনি মন্দিরে থেকে মন্দির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করে আসছিলেন। মন্দিরের পাশের এক বাড়িতে তিনি তিন বেলা খাবার খেতেন। আজ দুপুর ১২টার দিকে গ্রামের এক বৃদ্ধা মন্দিরে পূজা দিতে এসে দীপকে মন্দিরের ভেতরে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পান। অনেক ডাকাডাকির পরও দীপ ঘুম থেকে না উঠলে তিনি মন্দিরের আশপাশের লোকজনকে জানান। এরপর তাঁরা পুলিশে খবর দেন। পরে বাঘারপাড়া থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বেলা দুইটার দিকে মন্দিরের ভেতর থেকে দীপের মরদেহ উদ্ধার করে।
দীপ মণ্ডলে ৬ ফেব্রুয়ারি ওই মন্দিরে আসেন। সেই থেকে তিনি মন্দিরে থেকে মন্দির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করে আসছিলেন।
মন্দিরটির পাশেই বাঘারপাড়া মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক পদ্মলোচন নিয়োগীর বাড়ি। তিনি বলেন, ‘দীপ লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বলে আমরা জানতাম। তিনি স্বপ্নে দেখে বিশ্বাস করে মন্দিরে আসেন এবং পূজা থেকে শুরু করে মন্দিরের যাবতীয় কাজের ভার নিজে গ্রামবাসীর কাছ থেকে চেয়ে নেন। তিনি গ্রামেরই একজনের বাড়িতে তিন বেলা খাবার খেতেন। আজ দুপুরে মন্দিরের ভেতরে তাঁকে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে বাঘারপাড়া থানার পুলিশ এসে তাঁর মরদেহ নিয়ে গেছে।’
বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন বলেন, মন্দিরের ভেতর থেকে দীপ মণ্ডলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। অসুস্থতার কারণে তাঁর মৃত্যু হতে পারে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।