দর্শনা পৌরসভা
টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কোষাধ্যক্ষ ও সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা পৌরসভার কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ মো. রুমি আলম (৫৬) ও সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী এস এম আবদুস সামাদের (৩৮) বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরস্পর যোগসাজশে জাল-জালিয়াতি, প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে দুইটি প্রকল্পের কাজ না করে ভুয়া পরিমাপ বহি ও বিল ভাউচার তৈরি করে ১৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এ মামলা করা হয়।
দুদকের সহকারী পরিচালক মো. বজলুর রহমান বাদী হয়ে আজ বুধবার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এ মামলা করেন। আসামি সৈয়দ মো. রুমি আলম বর্তমানে দর্শনা পৌরসভায় চাকরি করলেও আবদুস সামাদ মুন্সিগঞ্জের মীরকাদিম পৌরসভায় কর্মরত।
দুদক সমন্বিত কার্যালয়, ঝিনাইদহ সূত্রে জানা গেছে, দর্শনা পৌরসভার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ও বিশেষ বরাদ্দ (জিওবি) অর্থায়নে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পৌর এলাকার দক্ষিণ চাঁদপুর স্কুল মোড় থেকে স্কুলপাড়া জুড়নের বাড়ি পর্যন্ত পুরোনো কার্পেটিং রাস্তার উন্নয়ন এবং জুড়নের বাড়ি থেকে পৌরসভার সীমানাপ্রাচীর পর্যন্ত পুরোনো রাস্তার উন্নয়নের দুইটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করা হলে চারটি প্রতিষ্ঠান এতে অংশগ্রহণ করে। দাখিলকৃত দরপত্রের মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা দক্ষিণ চাঁদপুরের মেসার্স জয়নাল আবেদীনকে ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এবং দর্শনা কলেজপাড়ার মেসার্স নাজমুল হুদাকে ২০ আগস্ট কার্যাদেশ দেওয়া হয়।
প্রকল্পভুক্ত রাস্তা দুইটি এলজিইডি চুয়াডাঙ্গা সদরের আইডিভুক্ত হওয়ায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এলজিইডি চুয়াডাঙ্গা কর্তৃক বন্যা ও দুর্যোগ পল্লিসড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় (এফডিডিআরআইআরপি) প্রকল্পের আওতায় ওই রাস্তা বাস্তবায়ন করার সুযোগ নেয়। কার্যাদেশ মোতাবেক ঠিকাদারেরা কাজ না করা সত্ত্বেও দর্শনা পৌরসভার তৎকালীন উপসহকারী প্রকৌশলী এস এম আবদুস সামাদ ভুয়া পরিমাপ বহি ও ভুয়া ভাউচার তৈরি করে প্রকল্প দুইটি বাস্তবায়ন দেখিয়ে বিল প্রদানের জন্য সুপারিশ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দর্শনা পৌরসভার তৎকালীন মেয়র (বর্তমানে মৃত) মো. মতিয়ার রহমান এবং সচিবের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী মো. মজিবর রহমানের যৌথ স্বাক্ষরে বিল অনুমোদন করা হয়।
বিল অনুমোদন করার পর সোনালী ব্যাংক দামুড়হুদা শাখার সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর ৩১০৩০০২০৪০৭১৯ নম্বর থেকে চারটি চেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে ১৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা ইস্যু করা হলেও তাঁরা (ঠিকাদার) কোনো চেক পাননি এবং চেকগুলো ঠিকাদারের ব্যাংক হিসাবের বিপরীতে (অ্যাকাউন্টপেয়ী) ছিল না। ফলে কোষাধ্যক্ষ (তৎকালীন হিসাবরক্ষক) সৈয়দ মো. রুমি আলম এবং সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী এস এম আবদুস সামাদ পরস্পর যোগসাজশে ওই ১৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা সোনালী ব্যাংকের দামুড়হুদা শাখা থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে আবদুস সামাদ ও সৈয়দ মো. রুমি আলমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।