নারায়ণগঞ্জে ‘ছিনতাইকারী’ আখ্যা দিয়ে দুজনকে স্থানীয় জনতার পিটুনি, একজনের মৃত্যু

গণপিটুনিপ্রতীকী ছবি প্রথম আলো

ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জে পৃথক দুটি স্থানে দুই যুবককে পিটিয়েছেন স্থানীয় জনতা। তাঁদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রোববার রাত ১০টায় মো. কামরুল (২৭) নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে।

গতকাল দুপুরে ফতুল্লার শিয়াচর তক্কার মাঠ এলাকায় পিটুনির শিকার হন কামরুল। তিনি চাঁদপুর জেলার হাইমচর সদর থানা এলাকার হুমায়ুন কবির ওরফে জাহাঙ্গীরের ছেলে। তিনি সপরিবার শিয়াচর তক্কার মাঠ এলাকায় বসবাস করতেন।

পিটুনিতে নিহত মো. কামরুল
ছবি: সংগৃহীত

পিটুনির শিকার অন্যজন হলেন মো. ফেরদৌস (৩৫)। তিনি গতকাল রাত তিনটায় সদর থানার ডিআইটি মিন্নত আলী শাহ মাজার এলাকায় গণপিটুনির শিকার হন। ফেরদৌস ডিআইটির পাশের এলাকা দেওভোগের বাসিন্দা। নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় নিয়ে গেছেন স্বজনেরা। ফেরদৌস ও কামরুল এলাকায় ‘ছিনতাইকারী’ হিসেবে পরিচিত বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফতুল্লার শিয়াচর তক্কার মাঠসহ আশপাশের এলাকায় সম্প্রতি ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছিল। গতকাল দুপুরে তক্কার মাঠ এলাকায় কামরুলকে পেয়ে ছিনতাইকারী আখ্যা দিয়ে পেটান বিক্ষুব্ধ জনতা।

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান, গণপিটুনির খবর পেয়ে পুলিশ কামরুলকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাত ১০টায় সেখানেই কামরুলের মৃত্যু হয়। নিহত কামরুলের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান ওসি।

আরও পড়ুন

ডিআইটি এলাকার ঘটনার বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ভাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার ভোরে ডিআইটি মিন্নত আলী শাহ মাজার এলাকায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে মো. ওয়াজেদ সীমন্ত (২০) নামে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর একই স্থানে গতকাল রাতে স্থানীয় লোকজন ছিনতাইকারী আখ্যা দিয়ে ফেরদৌস নামের যুবককে পিটুনি দেন। পরে কে বা কারা তাঁকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।

ওসি নাছির আহমদ বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে গেলে জানা যায়, ফেরদৌসকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর স্বজনেরা ঢাকায় নিয়ে গেছেন। আমরা সীমান্ত হত্যার পাশাপাশি গণপিটুনির ঘটনাটিকেও গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি।’