চিনিকলের জমি দখলের সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপি নেতার সংবাদ সম্মেলন
পঞ্চগড় চিনিকলের সাবজোনের এসইডিওর কোয়ার্টার চত্বরের জমি দখলের সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বোদা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান। আজ মঙ্গলবার বিকেলে জেলা শহরের একটি আবাসিক হোটেলের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি প্রথম আলোসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরিফুর রহমান বলেন, ‘আগে আমি ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক থাকলেও বর্তমানে কোনো পদে নেই। মূলত ওই জমির মালিক আমার বাবা আবদুল কুদ্দুস। বাবা বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ায় আমি সংসারের দায়িত্ব পালন করায় ভুলক্রমে আমাদের পরিবারের লোকজন না বুঝে প্রথমে আমার নামে সেখানে সাইনবোর্ড টাঙিয়েছিল। পরে আমি জানতে পেরে সাইনবোর্ডটি আমার বাবার নামে দেওয়া হয়।’
আরিফুর রহমান আরও বলেন, ‘বিএনপি নেতা হিসেবে আমার নামে জমি দখলের খবর প্রকাশিত হওয়ায় আমি প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমার বাবা অরাজনৈতিক বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি। জমির মালিক হিসেবে সংবাদটি আমার বাবার নামে হওয়ার কথা ছিল। জনপ্রতিনিধি হিসেবে কিংবা কোনো রাজনৈতিক দলের প্রভাব খাটিয়ে আমি জমি দখল করিনি। কিন্তু আমি জনপ্রতিনিধি হওয়ায় একটি মহল আমার ব্যক্তিগত সুনাম নষ্ট করতে এভাবে সংবাদ প্রকাশ করিয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে জমির দলিলপত্র দেখিয়ে আরিফুর রহমান বলেন, ‘১৯৬৩ সালে আমার দাদা, আমার বাবা ও চাচার নামে অধির ও সুধীর চন্দ্র নামে দুজনের কাছ থেকে দুটি দলিলে মোট ২০ বিঘা জমি কিনেছিলেন। তার মধ্যে বোদা পৌরসভার থানাপাড়া এলাকায় ১৬৭ শতক জমি ছিল। এরপর ১৯৭৭ সালে ওই ১৬৭ শতকের মধ্যে ২০ শতক পূর্বের মালিকেরা পঞ্চগড় চিনিকল কর্তৃপক্ষের কাছে বিক্রি করেন। কাগজপত্র দেখে আমরা জানতে পারি ওই জমি আমাদের কাছে আগে বিক্রি করে একই জমি পরে চিনিকলের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। সেই হিসেবে ওই জমির মূল মালিক আমার বাবা।’
আরিফুর রহমান দাবি করেন, ‘এটা নিয়ে একাধিকবার আমরা জমির রেকর্ডীয় মালিকদের (বিক্রেতা) সঙ্গে বসার চেষ্টা করলেও তাঁরা শোনেননি। কাগজপত্র ঠিক থাকায় আমার বাবা জমিতে গেছেন। আমাদের পুরো ১৬৭ শতক জমির খাজনা দেওয়াসহ সব কাগজপত্র হালনাগাদ আছে।’ এ সময় সম্পত্তি উদ্ধারে প্রশাসন ও গণমাধ্যমকর্মীদের সহায়তা কামনা করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরিফুরের বাবা আবদুল কুদ্দুস, বোদা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুল মালেক, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবু সায়েম মো. রুবেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বোদা পৌরসভার থানাপাড়া এলাকায় পঞ্চগড় চিনিকলের দেওয়া সীমানাপ্রাচীরের ভেতরে একটি পরিত্যক্ত বাসভবনসহ ২০ শতক জমি আছে। ৭ আগস্ট সেই জমিতে ছোট্ট টিনের চালাঘর তুলে ক্রয়সূত্রে জমির মালিক দাবি করে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেন আরিফুর রহমান। সেই জমিতে কিছু গাছের চারাও লাগানো হয়। পরে গত রোববার সকালে সাইনবোর্ড সরিয়ে তাঁর বাবা আবদুল কুদ্দুসের নামে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় চিনিকল কর্তৃপক্ষ বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সেনা ক্যাম্প ও বোদা থানা-পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ প্রথম আলোতে “চিনিকলের জমি দখলে বিএনপি নেতা” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।