ফরিদপুরে আ.লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মান্নান মাতুব্বরের বাড়িতে হামলার পর আগুন দেয় প্রতিপক্ষছবি: প্রথম আলো

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মান্নান মাতুব্বর ও তাঁর স্বজনদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের ময়েনদিয়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, পাশের সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের বড় খারদিয়া গ্রামের বাসিন্দারা হামলায় অংশ নেয়। হামলাকারীরা মান্নান মাতুব্বর, তাঁর তিন ছেলে হারেজ মাতুব্বর, মজনু মাতুব্বর ও মাসুদ মাতুব্বর এবং মান্নানের ভাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য সিদ্দিক মাতুব্বরের বাড়িতে হামলা করে লুটপাট চালায়। পরে বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এরপর মান্নানের সমর্থক সালথার খারদিয়া গ্রামের হাসেম মোল্লা, কালাম মোল্লা, ইব্রাহিম মোল্লা, জালাল মোল্লা ও হবি মোল্লার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সালথার যদুনন্দী ইউনিয়নের বারখাদিয়া গ্রামের আবুল কালাম আজাদ বর্তমানে পলাতক। ওই মামলায় সাক্ষী ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান মান্নান মাতুব্বর। এ ছাড়া ময়েনদিয়া বাজারে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। এত দিন মান্নান মাতুব্বর ও তাঁর অনুসারীদের একক কর্তৃত্ব বজায় ছিল। দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে আজ তাঁর বাড়িতে হামলা হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয় বাসিন্দাদের। হামলার সময় মান্নান মাতুব্বর ও তাঁর স্বজনেরা পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। এ ঘটনায় কারও হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আবুল কালাম আজাদের ছেলে জিহাদ মিয়ার নেতৃত্বে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। তবে অভিযোগের বিষয়ে জিহাদ মিয়ার মুঠোফোন নম্বর বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বোয়ালমারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পরমেশ্বরদী ইউপির চেয়ারম্যানের বাড়িসহ কয়েকটি বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় কারও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ করেননি। কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি।

জানতে চাইলে ফরিদপুরের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা-সালথা সার্কেল) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, মান্নান মাতুব্বর আবুল কালাম আজাদের মামলার সাক্ষী ছিলেন; কিন্তু হামলার পেছনে ওই ঘটনা ছিল বলে তাঁর মনে হয়নি। তিনি বলেন, ময়েনদিয়া এলাকার বড় একটি বাজার। এত দিন মান্নান মাতুব্বর এবং বড়খারদিয়া গ্রামের ইব্রাহিম মোল্লা ও তাঁর ভাইয়েরা বাজার নিয়ন্ত্রণ করতেন। ওই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলার পর ইব্রাহিম মোল্লাদের বাড়িতেও হামলা হয়। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।