লালমনিরহাটে বাধা পেয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করেই ফিরে গেলেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা

লালমনিরহাটে উচ্ছেদস্থলে লোকজন জড়ো করায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা থাকায় অভিযান না চালিয়ে ফিরে যায় কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার দুপুরে শহরের বিডিআর রোডের বসুন্ধরা মার্কেট এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

লালমনিরহাটে বাধা পেয়ে রেলওয়ের জমিতে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করেই ফিরে গেছেন রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সেখানে এক-দেড় শ লোক জড়ো করায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা থাকায় অভিযান চালানো হয়নি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে শহরের বিডিআর রোডের বসুন্ধরা মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ওই এলাকার ব্যবসায়ী শরীফ মো. আতাউল্লাহ সরকারের দখলে থাকা রেলওয়ের এক হাজার বর্গফুট জায়গায় নির্মিত আধা পাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে যায় লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ভূসম্পত্তি বিভাগ। ওই স্থাপনা নিয়ে আগেও বিভিন্ন সময় বাধা এসেছে। অন্তত দুই বছর আদালতে মামলা চলার পর সম্প্রতি মামলা খারিজ করে দেন উচ্চ আদালত।

আতাউল্লাহ সরকারকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে চলতি বছরের ১৩ জুন নোটিশ দেয় রেলওয়ে। ওই দিনই স্বাক্ষর করে নোটিশটি গ্রহণ করেন আতাউল্লাহ। নোটিশে চলতি বছরের ১ জুলাইয়ের মধ্যে রেলওয়ের জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে জমি রেলওয়েকে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু আতাউল্লাহ স্থাপনা সরিয়ে জমি বুঝিয়ে না দেওয়ায় আজ সেখানে অভিযানে যায় রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগ।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুরে লালমনিরহাট রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগের প্রধান ও ডেপুটি কমিশনার পূর্ণেন্দু দেবের নেতৃত্বে ভূসম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ঘটনাস্থল বসুন্ধরা মার্কেট এলাকায় এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালাতে যান। কিন্তু তার আগেই সকাল থেকে আতাউল্লাহর সমর্থনে সেখানে এক থেকে দেড় শ যুবক সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের অনেককে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কর্মসূচি দেখা যায় বলে অভিযোগ আছে। উপস্থিত লোকজন ও সার্বিক পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশঙ্কা থাকায় অভিযান না করে ফিরে যায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা পূর্ণেন্দু দেব প্রথম আলোকে বলেন, ব্যবসায়ী আতাউল্লাহ সরকারকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে প্রথম ২০২১ সালের ২৩ আগস্ট নোটিশ দেওয়া হয়। তিনি তখন নোটিশ চ্যালেঞ্জ করে এবং নিজেকে রেলওয়ের একজন ইজারাগ্রহীতা দাবি করে জেলা জজ আদালতে একটি মামলা করেন। কিন্তু সুফল না পাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় কয়েক মাস পর প্রত্যাহার করে নেন। এরপর রেলওয়ের উচ্ছেদ নোটিশকে উচ্চ আদালতের সব স্তরে গিয়ে সুফল না পেয়ে সর্বশেষ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে সিভিল রিভিউ পিটিশন করেন। চলতি বছরের ১৪ মার্চ সেই পিটিশন খারিজ করে দেন আদালত। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ দুপুরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু উপস্থিত উচ্ছৃঙ্খল লোকজন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা থাকায় অভিযান না চালিয়ে আপাতত ফিরে এসেছেন। পরে আবার উচ্ছেদের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে সময় উল্লেখ করেননি তিনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী শরীফ মো. আতাউল্লাহ সরকার কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।