৩৮০টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই

নেত্রকোনা জেলার মানচিত্র

নেত্রকোনায় অন্তত ৩৮০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদশূন্য রয়েছে। এ ছাড়া ২৩টি সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (এইউইও) পদশূন্য। এতে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা ব্যাহত হচ্ছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, নেত্রকোনায় ১০টি উপজেলায় ১ হাজার ৩১৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। ওই বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রধান শিক্ষকের অনুমোদিত পদ আছে ১ হাজার ৩১২টি। শুধু দুটি বিদ্যালয়ে এখনো প্রধান শিক্ষকের পদ অনুমোদন হয়নি। অনুমোদিত পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ৯৩২ জন প্রধান শিক্ষক। বাকি ৩৮০টি বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়েই চলছে কার্যক্রম। জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। এর মধ্যে ১ লাখ ২০১ জন ছাত্রী রয়েছে। ওই সব শিক্ষার্থীর বিপরীতে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক মিলে কর্মরত আছেন ৭ হাজার ৬২৩ জন। সহকারী শিক্ষকের অনুমোদিত পদ ৬ হাজার ৯২০টি। ওই পদে শূন্য আছেন ২৩০ জন শিক্ষক। এ ছাড়া বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য ৪৬টি সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার (এইউইও) পদ রয়েছে। এর মধ্যে কর্মরত আছেন ২৩ জন এইউইও। ওই ২৩টি পদ গত দুই থেকে পাঁচ বছর ধরে শূন্য।

সূত্র জানায়, কলমাকান্দা উপজেলায় প্রধান শিক্ষকের ১৭২টি পদের মধ্যে ৫৯টি, আটপাড়া ১০৩টির মধ্যে ২৮টি, কেন্দুয়া ১৮২টির মধ্যে ৪৬টি, দুর্গাপুর ১২৬টির মধ্যে ২৪টি শূন্য। আটপাড়ায় সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার ৪টি পদের মধ্যে ২টি, কলমাকান্দায় ৫টির মধ্যে ৩টি, কেন্দুয়ায় ৭টির মধ্যে ৫টি, দুর্গাপুরে ৪টির মধ্যে ৩টি, সদরে ৭টির মধ্যে ৪টি, পূর্বধলায় ৬টির মধ্যে ৩টি, বারহাট্টায় ৪টির মধ্যে ১টি এবং মোহনগঞ্জে ৪টির মধ্যে ২টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য।

কলমাকান্দা, আটপাড়া ও সদর উপজেলার অন্তত ১৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিতে একসঙ্গে সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকের দ্বৈত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে তাঁদের। বিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি প্রশাসনিক দায়িত্ব সামলাতে অনেককে বেশ বেগ পেতে হয়। একাধিক অভিভাবক জানান, প্রধান শিক্ষকের পদ খালি থাকায় বিদ্যালয়গুলো অনেকটা অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। ভারপ্রাপ্তরা অনেক সময় সঠিক সিদ্ধান্তও নিতে পারেন না।

আটপাড়া সুনই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবদুল গাফফার জানান, তাঁর বিদ্যালয়ে প্রায় ১৮০ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। শিক্ষক আছেন তিনজন। পাঠদানের পাশাপাশি অফিসের কাজসহ তাঁকে সব কিছু সামলাতে হচ্ছে। এতে অনেকটা ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ৩৮০টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ২৩০ জন সহকারী শিক্ষক ও বিভিন্ন উপজেলায় ২৩ জন এইউইওর পদ শূন্যসহ শিক্ষা কার্যালয়েও কিছু জনবলসংকট আছে। বিষয়টি বিভাগীয় উপপরিচালক, সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে এই সংকট দ্রুত সমাধান হবে। তবে সহকারী শিক্ষক নিয়োগপ্রক্রিয়া চলমান। গত শুক্রবার ওই পদে লিখিত পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।