কলেজছাত্রী ছিনতাই ও যৌন নিপীড়নের শিকার, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের একছাত্রী ছিনতাই ও যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ। আজ রাত ১১টায়
ছবি: প্রথম আলো।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌরাস্তা এলাকায় সড়ক অবরোধ করেছেন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার সন্ধ্যায় অটোরিকশাযাত্রী এক কলেজছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের পর স্বর্ণালংকার, মুঠোফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে রাত ১০টা থেকে চৌরাস্তা এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। রাত সাড়ে ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ চলছিল।

প্রত্যক্ষদর্শী ও কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সন্ধ্যায় বেগমগঞ্জ চৌরাস্তা এলাকায় অবস্থিত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ইফতার অনুষ্ঠান ছিল। ইফতার শেষে মাইজদী এলাকার বাসায় যাওয়ার জন্য সন্ধ্যা আনুমানিক পৌনে সাতটার দিকে দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী কলেজের সামনে থেকে চৌমুহনী-মাইজদী মহাসড়কে চলাচলকারী একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠছেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, ওই ছাত্রী অটোরিকশায় ওঠার কয়েক মিনিট পরই পেছনে থাকা দুই পুরুষযাত্রী তাঁকে যৌন নিপীড়ন করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁর চোখে মলমজাতীর কিছু লাগিয়ে দেন। এরপর তাঁর সঙ্গে থাকা স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা এবং মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন। ওই ব্যক্তিরা তাঁকে নিয়ে অটোরিকশাটি একই সড়কের একলাশপুর এলাকা পর্যন্ত কয়েক চক্কর ঘোরাঘুরি করে। একপর্যায়ে ওই ছাত্রীর চিৎকার চেঁচামেচিতে ছিনতাইকারীরা তাঁকে সড়কের পাশের খলিল বাড়ির সামনে অটোরিকশা থেকে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ছাত্রীর চিৎকারে আশপাশের মানুষ এগিয়ে এসে তাঁকে উদ্ধার করেন।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ওই ছাত্রী তাঁদের বিষয়টি জানানোর পর তাঁরা তাঁকে সুধারাম থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু ওই ছাত্রী সুধারাম থানায় গেলেও তাঁকে কোনো আইনগত সহায়তা করা হয়নি। পরে শিক্ষার্থীরা ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পুনরায় ক্যাম্পাসে নিয়ে আসেন এবং এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনার দাবিতে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত আনুমানিক ১০টা থেকে চৌরাস্তা এলাকায় সড়ক অবরোধ করে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কয়েক শ শিক্ষার্থী। তাঁরা এ সময় কলেজের ছাত্রীকে হেনস্তাসহ তাঁর কাছ থেকে মুঠোফোন ও অন্যান্য জিনিস ছিনতাইয়ের প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। ওই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

কলেজের অধ্যক্ষ আবদুর রকিব প্রথম আলোকে বলেন, আজ সন্ধ্যায় কলেজের এক ছাত্রী ইফতার অনুষ্ঠান শেষে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় মাইজদী এলাকার বাসায় ফেরার পথে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। সম্ভবত ছিনতাইকারীরা তাঁর চোখে মলমজাতীয় কিছু লাগিয়ে দিয়ে সঙ্গে থাকা মুঠোফোনসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়েছে। পরে ছাত্রীর চিৎকারে তারা তাঁকে একটি বাড়ির সামনে সড়কের পাশে ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিষয়টি দেখছে।

ঘটনাস্থলে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইব্রাহিম রাত সোয়া ১১টায় প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে রয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে বিস্তারিত জানাবেন।