পাবনা জেলা বিএনপির তিন মাসের জন্য গঠন করা আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে আড়াই বছর চলার পর আবারও ৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। দীর্ঘ জটিলতার পর দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এ কমিটির তালিকা গত ২২ আগস্ট পাবনায় পৌঁছেছে।
নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটিতে হাবিবুর রহমানকে আবার আহ্বায়ক ও সাবেক সহসভাপতি মাসুদ খন্দকারকে সদস্যসচিব করা হয়েছে। নতুন কমিটি নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে দলের একটি পক্ষের মধ্যে।
জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১২ সালের ২২ জানুয়ারি জেলা বিএনপির সর্বশেষ পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হয়। সেই থেকে বিভক্তি শুরু জেলা বিএনপিতে। তৈরি হয় ‘বিএনপি রক্ষা কমিটি’। ২০১৯ সালের ৩ জুলাই কেন্দ্রীয় বিএনপি পূর্ণাঙ্গ কমিটি ভেঙে ৪৮ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে। ওই কমিটিতে বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান আহ্বায়ক ও সিদ্দিকুর রহমানকে সদস্যসচিব করা হয়। এ কমিটির দায়িত্ব ছিল ৯০ দিনের মধ্যে জেলার ৯ উপজেলা ও ৯ পৌরসভার ১৮টি নতুন কমিটি গঠন করা।
নেতা-কর্মীরা জানান, ১৮ কমিটির মধ্যে নতুন ৯টি গঠন করা হলেও তা মেনে নেয় না দলের একটি পক্ষ। দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিএনপি নেতা-কর্মীরা। এতে থেমে যায় কমিটি গঠনপ্রক্রিয়া। এরপর প্রায় আড়াই বছর দায়িত্ব পালন করে তিন মাসের জন্য গঠন করা আহ্বায়ক কমিটি। নানা অভিযোগ উঠতে থাকে কমিটির বিরুদ্ধে। গত এপ্রিল মাসে ৪৮ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ভেঙে দিয়ে ৬ সদস্যের ছোট নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এবার আবার ৬ সদস্যের কমিটি ভেঙে ৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হলো। নবগঠিত এ কমিটিতে অন্যদের মধ্যে বিএনপি নেতা আবদুস সামাদ খান, আনিসুল হক, শেখ তুহিন ও নূর মোহাম্মদ মাসুমকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে।
নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপিতে কোনো ভাগ নেই। নেতা-কর্মীরা একসঙ্গে ছিলেন, একসঙ্গেই আছেন। মূলত করোনার কারণে আমরা আগের মেয়াদে উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি গঠনপ্রক্রিয়া শেষ করতে পারিনি। নতুন করে দায়িত্ব পাওয়ার পর আমরা আবার সে প্রক্রিয়া শুরু করেছি। আশা করছি, খুব শিগগিরই কমিটি গঠন শেষ হবে।’
এ দিকে নতুন করে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই অসন্তোষ শুরু হয়েছে দলের একাংশের মধ্যে। জেলার ঈশ্বরদী ইপিজেড
এলাকায় স্থানীয় বিএনপির এক সমাবেশে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম সরদার। তিনি বলেন, যাঁরা কখনোই বিএনপি করেননি। তাঁরাই আজ বিএনপির নেতা। তাঁরা কখনো কোনো আন্দোলন সংগ্রাম করেননি।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সর্বশেষ বিলুপ্ত কমিটির দপ্তর সম্পাদক জহুরুল ইসলাম বলেন, একজন ব্যর্থ নেতাকে নিয়ে জেলা বিএনপিতে বারবার আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হচ্ছে। গত তিন বছরে তিনি বিএনপির জন্য কিছুই করতে পারেননি। দল গোছানোর পরিবর্তে বিএনপিকে দু-তিন ভাগে বিভক্ত করেছেন। আবারও তাঁকেই আহ্বায়ক করা দলের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হয়ে গেল।