রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি–সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়া দুই নেতাকে স্বপদে বহাল করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। গঠনতন্ত্র না মেনে বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগ তাঁদের দুজনকে অব্যাহতি দেওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে বিবৃতি দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ।
‘দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও গঠনতন্ত্রবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত’ থাকার অভিযোগে গত ১৮ মার্চ তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বাক্কার মৃধা মনসুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদকে অব্যাহতির ঘোষণা দেয় বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে পৌর কমিটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদককে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য এনামুল হক উপজেলা সদর থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে এসে সংগঠনের কার্যকরী কমিটির সভা করে এই সিদ্ধান্ত নেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
দুই নেতাকে অব্যাহতির বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য এনামুল হক বলেছিলেন, তাহেরপুরের দুই নেতা দলীয় শৃঙ্খলা মানেন না এবং সভায় উপস্থিত থাকেন না।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। অব্যাহতি পাওয়া দুই নেতা সুষ্ঠু সাংগঠনিক সুরাহা চেয়ে জেলা আওয়ামী লীগের কাছে লিখিত আবেদন করেন। ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া দুই নেতা কাউছার আলী ও মাহাবুর রহমান তাঁদের পদ প্রত্যাখ্যান করে জেলা কমিটির কাছে লিখিতভাবে জানান।
এমন অবস্থায় আজ রোববার একটি বিবৃতি দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। গতকাল শনিবার সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ স্বাক্ষর করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতির বিষয়টি উপজেলা কমিটি লিখিতভাবে জানায়নি। তবে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যম ও কথিত অব্যাহতি পাওয়া দুই নেতার লিখিত আবেদন পাওয়া গেছে। এই বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগ অনুসন্ধান করে এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেনের সঙ্গে আলাপ করলে বিষয়টি গঠনতন্ত্র মোতাবেক হয়নি বলে মন্তব্য করেন। এ ছাড়া উপজেলা কমিটির দায়িত্ব দেওয়া ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ এবং পদ প্রত্যাখ্যান করেন। এ জন্য সভাপতি পদে আবু বাক্কার মৃধা মনসুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক পদে মেয়র আবুল কালাম আজাদই দায়িত্ব পালন করবেন।
যোগাযোগ করা হলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের অব্যাহতির প্রক্রিয়া গঠনতন্ত্র মোতাবেক ছিল না। এ রকম কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগকে সতর্ক করে চিঠি দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারওয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তাঁরা জেলা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের কোনো চিঠি এখনো পাননি।
তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, সংসদ সদস্য ব্যক্তিগত আক্রোশে দলীয় গঠনতন্ত্র না মেনে দলীয় পদ থেকে তাঁদের অব্যাহতি দিয়েছিলেন। জেলা আওয়ামী লীগের এই বিবৃতির মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে তাঁদের অব্যাহতির প্রক্রিয়া যথাযথ হয়নি।