কিশোরগঞ্জে ইজিবাইকচালকের হাত-পা বাঁধা ও মাথাকাটা লাশ উদ্ধার

ইজিবাইকচালক আল আমিন
ছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ব্যাটারিচালিত এক ইজিবাইকচালকের মাথাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে সদর উপজেলার মাইজখাপন ইউনিয়নের পাঁচধা এলাকার সড়কের পাশে ধানখেতে মরদেহটি পড়ে থাকতে দেখেন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বেলা ১১টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করে।

নিহত কিশোর আল আমিন (১৫) তাড়াইল উপজেলার সাচাইল ইউনিয়নের ভেরামতলা গ্রামের কাঞ্চন মিয়ার ছেলে। পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করতে তাড়াইলের আরিফুল ইসলামের গ্যারেজ থেকে ইজিবাইক ভাড়া নিয়ে চালাত আল আমিন। ইজিবাইকটি ছিনতাইয়ের জন্য দুষ্কৃতকারীরা তাঁকে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।

কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ্ আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ইজিবাইকটি নেওয়ার জন্যই আল আমিনকে হাত-পা বেঁধে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। হত্যাকারীদের ধরতে পুলিশ ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে।

নিহত আল আমিনের বড় ভাই রুবেল মিয়া জানান, রোববার দুপুরের খাবার খেয়ে আল আমিন ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। এদিন বিকেলে মুঠোফোনে সর্বশেষ বড় বোনের সঙ্গে কথা হলে সে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরবে বলে জানায়। প্রতিদিনই সন্ধ্যার আগেই বাড়িতে ফিরে আসত আল আমিন। কিন্তু রোববার সন্ধ্যা গড়িয়ে রাতেও বাড়িতে না ফেরায় বিভিন্ন জায়গায় তাকে খোঁজ করা হয়। সারা রাত খুঁজেও তার সন্ধান মিলছিল না।

রুবেল বলেন, ‘আজ সকালে মানুষের কাছে শুনতে পাই যে ধানখেতে একটি লাশ পড়ে আছে। এসে দেখি আমার ছোট ভাই আল আমিনকে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখা হয়েছে। ইজিবাইকটিও ছিনতাই হয়ে গেছে। আমাদের ধারণা, ইজিবাইকটি ছিনতাইয়ের জন্যই আমার ছোট ভাইকে এভাবে হত্যা করা হয়েছে। যারা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’

এর আগে গত ৩ অক্টোবর জেলার করিমগঞ্জের জাফরাবাদ ইউনিয়নের বাদেশ্রীরামপুর গ্রামের কাছে হুমায়ুন নামে আরেকজন চালককে হত্যা করে তাঁর ইজিবাইক ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। নিহত হুমায়ুন (২০) করিমগঞ্জ উপজেলার গুজাদিয়া ইউনিয়নের পূর্বচরকরণশি গ্রামের ওসমান মিয়ার ছেলে ছিল। তিনি লেখাপড়ার পাশাপাশি ইজবাইক চালিয়ে সংসারে সহযোগিতা করতেন। তাঁর লাশটিও ছিল হাত-পা বাঁধা অবস্থায়, মাথায় ছিল ধারালো অস্ত্রের আঘাত।

এক মাসের ব্যবধানে কিশোরগঞ্জে দুটি ইজিবাইকচালককে হত্যার ঘটনায় চালকসহ জনমনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। কিছু দুষ্কৃতকারী পরিকল্পনামাফিক যাত্রীবেশে ইজিবাইকে উঠে নির্জন স্থানে গিয়ে এসব হত্যকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, ‘কয়েক দিনের ব্যবধানে এ রকম দুটি ঘটনা অবশ্যই দুঃখজনক। এটা নিয়ে জোরালোভাবে মাঠে কাজ করার জন্য পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত চক্রটিকে দ্রুত চিহ্নিত করা যায়।’