কাজ হারানো মাঝিদের তিন দিনের মধ্যে কাজ না দিলে ইজারা বাতিল

কাজ না থাকায় নদের পাড়ে বেঁধে রাখা হয়েছে নৌকা। মাঝিরা ঘুরছেন বেকার। গত বৃহস্পতিবার সকালে টঙ্গী বাজার খেয়াঘাটেছবি: প্রথম আলো

গাজীপুরের টঙ্গী বাজার খেয়াঘাটে ‘প্রভাবশালীর’ দাপটে কাজ হারানো মাঝিদের আগামী তিন দিনের মধ্যে কাজ ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। পাশাপাশি সরকার নির্ধারিত পাঁচ টাকা ভাড়া আদায় করতে বলা হয়েছে।

তিন দিনের মধ্যে এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হলে ঘাটটির ইজারা বাতিল করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার সন্ধ্যায় বিআইডব্লিউটিএর পক্ষে টঙ্গী নদীবন্দরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম খেয়াঘাট পরিদর্শনে গিয়ে এসব নির্দেশনা দেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তুরাগ নদের টঙ্গী বাজার খেয়াঘাটে প্রায় ৩০ বছর ধরে নৌকা চালান ৬০ জন মাঝি। সেই আয় দিয়েই সংসার চালাতেন তাঁরা। এর মধ্যে হঠাৎ তাঁদের জীবনে কালো ছায়া হয়ে আসে টুটুল সরকার নামের স্থানীয় এক ‘প্রভাবশালী’। তিনি ঘাটের ইজারা পেয়ে ১ জুলাই সব নৌকা চলাচল বন্ধ করে দিয়ে নিজ ব্যবস্থাপনায় ইঞ্জিনচালিত ট্রলার নামিয়ে মানুষ পারাপার শুরু করেন। এতে কাজ হারিয়ে বেকায়দায় পড়েন মাঝিরা।

এ ছাড়া নদী পারাপারে সরকার নির্ধারিত ভাড়া পাঁচ টাকা হলেও টুটুল সরকার দাপট দেখিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে ১০ টাকা করে আদায় করছিলেন। এসব অসংগতি নিয়ে গতকাল শনিবার প্রথম আলোয় ‘কাজ হারিয়ে বিপাকে ৬০ মাঝি’ শিরোনামে প্রতিবেদন এবং আজ সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়। এরপর আজ ঘাট পরিদর্শনে যান বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজ সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে ঘাট পরিদর্শনে যান টঙ্গী নদীবন্দরের মোহাম্মদ শাহ আলম ও ছয় থেকে সাতজন আনসার সদস্য। তাঁরা পুরো ঘাট পরিদর্শন করে দেখেন এবং স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে ইজারাদার টুটুল সরকারের সঙ্গে কথা বলেন। ঘাটে মাঝিদের নৌকা বন্ধ করে দেওয়া, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চান। একপর্যায়ে আগামী তিন দিনের মধ্যে স্থানীয় কাউন্সিলরসহ মাঝিদের সঙ্গে বসে কাজ ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে বলেন। এ সময়ের মধ্যে মাঝিরা কাজ ফিরে না পেলে ঘাটের ইজারা বাতিল করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

টঙ্গী নদীবন্দরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডিরেক্টর স্যার (পরিচালক) আমাকে বলেছিলেন, ঘাটের ইজারা বাতিল করে দিতে। পরে মানুষ পারাপারের কথা ভেবে স্যারের সঙ্গে পরামর্শ করে ইজারাদারকে তিন দিনের সময় বেঁধে দিয়েছি। এর মধ্যে চলমান সমস্যা সমাধান করতে বলা হয়েছে। যদি তিনি না করেন, তবে ঘাটের ইজারা বাতিলের ব্যবস্থা করা হবে।’