লোডশেডিং রুটিনে ৩ ঘণ্টা, বাস্তবে ১২-১৫ ঘণ্টা

দেশজুড়ে লোডশেডিং চলছে
প্রথম আলো ফাইল ছবি

জ্বালানি সাশ্রয়ে সারা দেশের মতো টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলাতেও এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সময়সূচি (রুটিন) অনুযায়ী চলতে পারছে না বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। ভোর, দুপুর ও রাতের বেলায় তিন ঘণ্টার লোডশেডিং দেওয়ার কথা সময়সূচিতে থাকলেও কোনো কোনো এলাকায় ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে প্রচণ্ড গরমে মানুষের দুর্ভোগ সীমাহীন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। পিডিবি বলছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ কম পাওয়ায় রুটিনের বাইরেও লোডশেডিং করতে বাধ্য হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ) সখীপুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় বিদ্যুতের ৭০ হাজার  গ্রাহক আছে। বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে দৈনিক ২৮ মেগাওয়াট। পাওয়া যাচ্ছে ১২ থেকে ১৬ মেগাওয়াট। সুষ্ঠু বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে পুরো উপজেলাকে ১৬টি ফিডারে (একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের আওতাধীন এলাকা) ভাগ করা হয়েছে। লোডশেডিংয়ের জন্য করা সময়সূচিতে প্রতি ফিডারে ৩ ঘণ্টা করে লোডশেডিং দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

পিডিবির বিদ্যুৎ গ্রাহকেরা জানান, গত মঙ্গলবার থেকে আজ শুক্রবার ভোর ছয়টা পর্যন্ত উপজেলার ১৬টি ফিডারে কোথাও কোথাও ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা, আবার কোথাও ১২-১৫ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হয়েছে। এ ছাড়া দৈনিক বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার খেলা চলে ১২ থেকে ১৬ বার।

উপজেলার কচুয়া গ্রামের হায়দার আলী নামের একজন গ্রাহক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন প্রচণ্ড গরম। লোডশেডিংয়ের কারণে কয়েক দিন ধরে রাতের বেলায় ঘুমাতে পারি না। গত রাতেও জেগে হাতপাখা দিয়ে বাচ্চাদের ঘুম পাড়িয়েছি।’

উপজেলার বড়চওনা গ্রামের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, বাড়িতে আইপিএস রয়েছে। কিন্তু অতিরিক্ত সময় লোডশেডিং থাকায় আইপিএসও চার্জ হচ্ছে না।

সখীপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ লতিফ প্রথম আলোকে বলেন, পৌর শহরের ফিডারে উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও, মেয়র ওসি, বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের বড় নেতাদের বাসাবাড়ি থাকায় লোডশেডিং তুলনামূলকভাবে কম। অন্যদিকে গ্রামের অবস্থা ভয়াবহ। গ্রামের মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে দৈনিক ছয় থেকে আট ঘণ্টা।

সখীপুর পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ) মেহেদি হাসান ভূঞা প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিদ্যুৎ সরবরাহ কম পাওয়ায় রুটিনের বাইরেও লোডশেডিং করতে হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি রুটিন অনুসরণ করতে।’