খুলনায় বিভাগীয় শ্রম পরিচালকের অপসারণের দাবিতে সমাবেশ

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল চালু, শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ ও খুলনা বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালকের অপসারণের দাবিতে সমাবেশ ও ঘেরাও কর্মসূচি। মঙ্গলবার খুলনা শ্রম অধিদপ্তরের সামনেছবি: প্রথম আলো

খুলনা বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক মিজানুর রহমানের শাস্তি ও অপসারণের দাবিতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। খুলনা-যশোর আঞ্চলিক কারখানা কমিটির উদ্যোগে আজ মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত রূপসায় শ্রম অধিদপ্তরেরর সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

সমাবেশ থেকে খালিশপুর জুট মিল, দৌলতপুর জুট মিলসহ পাঁচটি পাটকলের শ্রমিকদের ২০১৫ সালের মজুরি কমিশনের এরিয়ারের টাকা, রাষ্ট্রীয়ভাবে পাটকল চালু, করোনাকালে সরকারের দেওয়া সুবিধাদি প্রদান, ২০২০ সালের নতুন দুটি উৎসব বোনাসের সব পাওনা পরিশোধের দাবি জানানো হয়।

কমিটির আহ্বায়ক মো. মনির হোসেনের সভাপতিত্বে ও খালিশপুর জুট মিল কারখানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে শ্রমিকনেতারা বলেন, ২০২০ সালে একযোগে ২৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ ঘোষণার পর বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলা হয়। আন্দোলনের শুরুতেই রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বিশেষ সংস্থা, পুলিশ প্রশাসন দ্বারা নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। খুলনা বিভাগীয় শ্রম পরিচালক মো. মিজানুর রহমান তৎকালীন সরকার ও সাবেক শ্রম প্রতিমন্ত্রীর আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে শ্রমিক স্বার্থের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন এবং এখনো শ্রমিক স্বার্থপরিপন্থী ভূমিকা রেখে চলেছেন।

শ্রমিকনেতারা বলেন, ‘আমাদের ঘামঝরানো টাকা কোনোভাবেই আত্মসাৎ হতে দেব না। খালিশপুর জুট মিলসহ অন্যান্য পাঁচটি জুট মিলের শ্রমিকদের সমুদয় টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।’

শ্রম পরিচালকের বিচার ও অপসারেণের দাবি জানিয়ে নেতারা বলেন, পাটকল আন্দোলন চলাকালে কারখানা চালু ও বকেয়া বেতনের জন্য খুলনা বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালকের কাছে গেলে তিনি প্রত্যক্ষ হুমকি দেন। তিনি ফ্যাসিস্ট সরকারের সাবেক শ্রমমন্ত্রীর আস্থাভাজন কর্মকর্তা ছিলেন। ওই পরিচালক দীর্ঘ ১৭ বছর একাধারে খুলনায় থাকায় তিনি ফ্যাসিবাদী সরকারের স্বৈরাচার পরিচালকে পরিণত হয়েছেন। সরকারি কর্মকর্তা হয়ে কীভাবে তিনি এত বছর খুলনায় থাকেন, তাঁরা জানতে চান।

শ্রমিকনেতারা অভিযোগ করে বলেন, সাবেক সরকারের ১৭ বছরে তিনি ১৫ জনকে ডিঙিয়ে পরিচালক হন। খুলনায় তিনি শহীদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালের উল্টো দিকে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ৬৭ নম্বর প্লট সাবেক শ্রমমন্ত্রীকে দিয়ে ২০১২ সালে ১ কোটি টাকা দিয়ে কিনেছেন। এখন তিনি সেই জায়গায় নয়তলা বাড়ি নির্মাণ করছেন। তিনি কীভাবে বিশাল সম্পদের মালিক হলেন, তা তাঁরা জানেন না। তাঁরা অবিলম্বে শ্রম পরিচালক মিজানুর রহমানের বিচার, অপসারণ এবং কারখানা চালু ও সব বকেয়া পরিষদের দাবি জানান।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে গণসংহতি আন্দোলনের খুলনা জেলার আহ্বায়ক মুনীর চৌধুরী, দৌলতপুর জুট মিল কারখানা কমিটির সভাপিত নূর মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক মো. মোফাজ্জেল হোসেন, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য মো. মোজাম্মেল হক খান, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের খুলনা জেলা সভাপতি কাজী দেলোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন শেখ, খুলনা-যশোর আঞ্চলিক বদলি কমিটির আহ্বায়ক মো. ইলিয়াস হোসেন, ক্রিসেন্ট জুট মিল কারখানা কমিটির সভাপতি শামছুজ্জোহা, সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন, খুলনা-যশোর আঞ্চলিক কারখানা কমিটির উপদেষ্টা মো. নূরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।