কেশবপুরে ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের রেশ কাটেনি, থমথমে পরিস্থিতি
যশোরের কেশবপুরের সুফলাকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী লীগ–সমর্থিত চেয়ারম্যানের সমর্থক ও বিএনপির সমর্থকের মধ্যে দ্বিতীয় দিনের মতো সংঘর্ষ হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যানের দাবি, আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কলাগাছি বাজারে তাঁর দুই সমর্থককে মারধর করা হয়েছে। বাজারটিতে দোকানপাট খুললেও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ–সমর্থিত চেয়ারম্যান উপজেলা মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি এস এম মনজুর রহমানকে ইউনিয়ন পরিষদে ঢুকতে দিচ্ছেন না স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তাঁরা ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝুলিয়ে পাহারা দিচ্ছেন। তাঁদের দাবি, আওয়ামী লীগ–সমর্থিত কোনো ব্যক্তি চেয়ারম্যান হিসেবে বসতে পারবেন না।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার বিকেলে ইউপি চেয়ারম্যান তাঁর লোকজন নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। পরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা গিয়ে আবারও চেয়ারম্যানকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বের করার চেষ্টা করেন। তখন উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১০ জনকে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মনজুর রহমান জানান, আজ সকাল থেকে তাঁর কর্মী-সমর্থকদের মারধর করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। বেতিখোলা গ্রামের আবদুল মান্নান (৪২) ও আড়ুয়া গ্রামের মাসুদুর রহমান গাজীকে আজ কলাগাছি বাজারে মারধর করা হয়। এর আগে গতকাল রাতে হাসপাতালে স্বজনদের দেখতে গিয়ে তাঁর সমর্থক বাহাদুরও মারধরের শিকার হয়েছেন।
মনজুর রহমানের অভিযোগ, একের পর এক তাঁর কর্মীদের মারধর করা হলেও পুলিশ কোনো ভূমিকা নিচ্ছে না। এসব ঘটনায় তাঁদের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দেওয়া হবে।
এদিকে ইউপি চেয়ারম্যানকে ইউনিয়ন পরিষদে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগটি মিথ্যা বলে দাবি করেছেন সুফলাকাঠি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জি এম মহিউদ্দিন। তিনি জানান, তাঁদের পক্ষ থেকে কোনো বাধা দেওয়া হচ্ছে না; বরং ইউপি চেয়ারম্যান নিজের বাহিনী দিয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, বিএনপির পক্ষে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যানের পক্ষের কেউই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।
ইউপি চেয়ারম্যানকে পুলিশ সহায়তা দিচ্ছে না, এমন অভিযোগের বিষয়ে ওসি জানান, এখন পর্যন্ত চেয়ারম্যান তাঁর সঙ্গে কোনো বিষয়েই কথা বলেননি। এলাকার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক।