কুষ্টিয়া থেকে নারায়ণগঞ্জগামী ঈগল এক্সপ্রেসের চলন্ত বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডাকাতির পাশাপাশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে যাত্রীদের বয়ানে তথ্য উঠে এসেছে। এমন একজন যাত্রী মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজীপুর গ্রামের বিপ্লব হোসেন। তিনি গত মঙ্গলবার রাতে তাঁর স্ত্রী শ্যামলী খাতুন, দুই শিশুসন্তান, ভাবি ও ভাবির এক শিশুসন্তান নিয়ে ওই বাসে করে নারায়ণগঞ্জে যাচ্ছিলেন।
বিপ্লব হোসেন বলেন, দৌলতপুর থেকে তিনি তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈগল পরিবহনের বাসে ওঠেন। নারায়ণগঞ্জে তিনি ইজিবাইক চালান। ঘটনার পর তিনি স্বজনদের নিয়ে নারায়ণগঞ্জে চলে যান।
ঘটনার বিষয়ে বিপ্লব হোসেন বলেন, ‘আমার সিটের দুই সারি পেছনে সর্বশেষ লাইনের সিটে একা বসেছিলেন মেয়েটি। তাঁর পাশে দুর্বৃত্ত দলের দুই তরুণ গিয়ে বসে। ডাকাতির সময় পুরুষ যাত্রীদের হাত, মুখ ও পা বেঁধে বসিয়ে রাখা হয়। মেয়েটির সঙ্গে ওই দুই তরুণের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে তারা। মেয়েটির মুখে কাপড় গোঁজা ছিল। তার গোঙানোর শব্দ আসছিল। কিন্তু কেউ তাকে রক্ষার জন্য এগিয়ে যেতে পারেনি।’
বিপ্লবের এক আত্মীয়ের কাছ থেকে যোগাযোগের মুঠোফোন নম্বর নিয়ে এই প্রতিবেদক তাঁর সঙ্গে প্রায় ১৫ মিনিট কথা বলেন। বিপ্লবের ভাষ্য, বাসে অন্তত ২৬ জন যাত্রী ছিলেন। ডাকাতেরা ছুরি গলায় ধরে পুরুষ যাত্রীদের মুখ, চোখ ও হাত বেঁধে ফেলে। যে-ই কোনো শব্দ করছিলেন, সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে আঘাত করা হচ্ছিল। এক যাত্রী মুঠোফোনে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করতে গেলে তাঁকে ছুরি দিয়ে পোচ দেওয়া হয়। ওই যাত্রীর শরীর থেকে রক্ত বের হয়। এরপর ভয়ে কেউ কোনো শব্দ করেননি।
বিপ্লব হোসেনের ভাষ্য, ডাকাত দলের সদস্যরা দেহ তল্লাশি করতে গেলে মেয়েটির সঙ্গে ডাকাত দলের দুই তরুণের বাগ্বিতণ্ডা হয়। মেয়েটি তাঁর সঙ্গে বাজে আচরণের প্রতিবাদ করেন। এর পরপরই ওই মেয়েকে ধর্ষণ করে একজন। এভাবে চলন্ত বাসে একে একে পাঁচ থেকে ছয়জন মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। ডাকাত দল বাসটি সড়কের পাশে কাত করে ফেলে রেখে চলে যায়। যাত্রীদের কেউ কেউ নিজেদের হাত ও মুখের বাঁধন খুলে মেয়েটিকে বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে উদ্ধার করেন।