আ.লীগের অস্ত্রের মহড়ার ছবি তোলায় ৩ জেলায় ৬ সাংবাদিককে মারধর
সারা দেশের তিন জেলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীদের অস্ত্র নিয়ে মহড়ার ছবি তুলতে গিয়ে অন্তত ছয়জন সাংবাদিক লাঞ্ছিত হয়েছেন। আজ রোববার জামালপুর, মেহেরপুর ও ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে এ ঘটনা ঘটে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি প্রতিহত করতে আওয়ামী লীগের ওই নেতা–কর্মীদের দেশি অস্ত্র হাতে মহড়া দিতে দেখা যায়।
জামালপুরে অস্ত্র নিয়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা মহড়া দিচ্ছিলেন। এ সময় মহড়ার ফুটেজ ধারণ করায় বেসরকারি সময় টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার জাহাঙ্গীর আলম ও ক্যামেরা পারসন আবুল কালামকে লাঞ্ছিত করেন পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ড শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমহীর হোসেন ওরফে টাইগার। এ সময় তাঁদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও করা হয়। আজ দুপুরে শহরের মির্জা আজম চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাংবাদিকেরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই এলাকায় শিক্ষার্থীরা গতকাল বড় ধরনের আন্দোলন করেছিলেন। আজও তাঁদের কর্মসূচি ছিল। এ জন্য আমি ও আমার ক্যামেরা পারসন সেখানে যাই। আমরা অবস্থান করার সময় ওই নেতারা সেখানে মহড়া দিচ্ছিলেন। সেটা আমার ক্যামেরা পারসন ধারণ করতে যান। ঠিক তখন ওই নেতা আমাদের লাঞ্ছিত করেন। বিষয়টি কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নেতার সাংগঠনিক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
শ্রমিক লীগের অভিযুক্ত নেতা আলমহীর হোসেনের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানি না। কোনো অভিযোগ পেলে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
এদিকে মেহেরপুরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা–কর্মীরা দেশি অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছিলেন। এ সময় প্রথম আলোর মেহেরপুর প্রতিনিধি আবু সাঈদকে পেটানো হয়। এ ছাড়া স্বেচ্ছাসেবক লীগের মিছিলের ছবি নিতে গেলে যুগান্তরের মেহেরপুর প্রতিনিধি তোজাম্মেল আযমের মুঠোফোন কেড়ে নেওয়া হয়। পরে ফোনটি ফেরত দেন তাঁরা।
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচির সময় দুই সাংবাদিকের ওপর হামলা করেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা। হামলায় দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সাংবাদিক মো. আতাউর রহমান গুরুতর আহত হন। তাঁর মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেওয়া হয়। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হন প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি মো. রুহুল আমীন (রিপন)। তাঁকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এ ছাড়া ঈশ্বরগঞ্জ পৌর বাজারে বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে গিয়ে একটি মোটরসাইকেল ও কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। এ সময় সাংবাদিকেরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।