রাঙ্গাবালীতে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের দেখতে গিয়ে তিনজনকে ভোট দিতে বললেন প্রতিমন্ত্রী মুহিববুর
ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়া এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পছন্দের তিনজনকে ভোট দিতে বলেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান। আজ শুক্রবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের উদ্দেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি ওই আহ্বান জানান।
প্রতিমন্ত্রীর এই বক্তব্যের ৩ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে বক্তব্যের একপর্যায়ে প্রতিমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি যে তিনজনকে ভোট দিতে বলেছি, প্রত্যেককে আপনারা ভোট দেবেন।’ তবে তিনি কোন তিনজনকে ভোট দিতে বলেছেন, সেটি ওই ভিডিওতে স্পষ্ট করে বলেননি।
প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান নিজের নির্বাচনী এলাকা রাঙ্গাবালী। তিনি রাঙ্গাবালী ও কলাপাড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত পটুয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য। প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের পদে থেকে প্রকাশ্যে পছন্দের প্রার্থীদের জন্য ভোট চেয়ে তিনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন বলে অন্য প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন।
সকাল ১০টায় উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের মুক্তিবাড়ী-সংলগ্ন বাঁধ এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আপনাদের সমস্যা আমি অবগত আছি। প্রধানমন্ত্রী অবগত আছেন। যত শিগগিরই সম্ভব, আপনাদের কাঙ্ক্ষিত বেড়িবাঁধ আমি করে দেব। ঘূর্ণিঝড় রিমালে যাঁরা ঘর হারিয়েছেন, তাঁদের আমি ঘর দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেব।’
ইউএনওকে উদ্দেশ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আগামীকালের মধ্যে এই ইউনিয়নের বরাদ্দ ৫০ টন চাল আর শুধু এই ইউনিয়নের জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে ৫ লাখ টাকা আলাদা বরাদ্দ দিয়ে গেলাম। ৫০ টন চাল ও ৫ লাখ টাকা এই ইউনিয়নের গরিবদের মধ্যে সুন্দরভাবে পৌঁছে দেবেন। আমি কাল ঢাকা যাব। আজ সন্ধ্যার মধ্যে কোন জায়গায় কতটুকু বাঁধ নষ্ট হয়েছে, সেই ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ পৌঁছে দেবেন। আমি গরিব মানুষদের পাশে থাকতে চাই।’
বক্তব্যের একপর্যায়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি রাঙ্গাবালীর মানুষদের অনেক ভালোবাসি। আপনারা কোনো চিন্তা করবেন না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাদের পাশে আছেন। আমিও পাশে আছি। ধৈর্য ধরেন, আপনাদের সমস্যা সমাধান করে দেব এবং আমি যে তিনজনকে ভোট দিতে বলেছি, প্রত্যেককে আপনারা ভোট দেবেন।’
জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভিডিও ফুটেজ দেখেছি। সেখানে তিনি কারও নাম উল্লেখ করেননি। তারপরেও তিনি একজন সংসদ সদস্য, প্রতিমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। এটাই আইন। এভাবে অংশগ্রহণ করা বা বক্তব্য দেওয়া ঠিক হয়নি।’