নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় এক নারীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় নিহতের স্বজনেরা মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আজ সোমবার সকালে নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে প্রথমে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয় এবং পরে ক্লাবের মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। কর্মসূচিতে নিহত নারীর স্বজনদের পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি ও এলাকাবাসী অংশ নেন।
গত ৩০ অক্টোবর বেগমগঞ্জ উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামে ওই নারীকে (৩৮) ঘরে ঢুকে ধর্ষণের চেষ্টা চালান ইমরান খান নামের এক ছাত্রলীগ নেতা। ওই নারী তখন ঘরে একা ছিলেন। ইমরান ঘরে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। ওই নারী বাধা দিলে তাঁকে ধারালো ছুরি দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ৯টি আঘাত করেন তিনি।
ঘটনার পর ওই নারীকে প্রথমে নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে স্থানান্তর করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ নভেম্বর ওই নারী মারা যান। সংবাদ সম্মেলনে ওই নারীর মেয়ে বলেন, তিনি এ ঘটনার পর একটি মামলা করেছিলেন। এরপর মা মারা গেলে সেটি হত্যা মামলায় পরিণত হয়। মামলায় ইমরান ও তাঁর মা নীলুফাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও নীলুফা এরই মধ্যে নিম্ন আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে নিহত নারীর মেয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তাঁর মাকে নির্মমভাবে হত্যা করে তাঁদের তিন বোনকে এতিম করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে তাঁরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা দাবি করে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নোবিপ্রবির সমন্বয়ক হাসিব আহমেদ, নোয়াখালী জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফরহাদুল ইসলাম ও নোয়াখালী কলেজের ছাত্র আক্তারুজ্জামান। তাঁরা নিহত নারীর তিন মেয়ের নিরাপত্তা দিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান এবং মামলার আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।
বেগমগঞ্জ থানার ওসি লিটন দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, নারীর পরিবারের অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তা নিয়মিত মামলা হিসেবে নেওয়া হয়। এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তারও করা হয়। ওই নারীর হাসপাতালে মারা যাওয়ার দিন আদালতকেও বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হয়। পরবর্তী সময়ে মামলার ২ নম্বর আসামি নীলুফা জাহান আদালত থেকে জামিন পান।