পাবনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩, দ্বিতীয় দফায় সংঘর্ষে আহত আরও ২০
পাবনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে গুলিতে আরও একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ দিয়ে জেলায় আজ রোববার সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল তিনজনে। দ্বিতীয় দফায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে আরও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
আজ বেলা সোয়া ১১টার দিকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের প্রধান ফটকে জমায়েত হন। এরপর তাঁরা জেলা শহরের ট্রাফিক মোড়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে তিনজন নিহত ও অন্তত ২৩ জন আহত হন। এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা এক আওয়ামী লীগ নেতার গাড়িতে আগুন দেয়।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মোট তিনজনের মৃত্যুর বিষয়ে তাঁরা নিশ্চিত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুজন হাসপাতালে ভর্তির পর মারা গেছেন। অন্যজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। মৃত ঘোষণার পরই তাঁকে হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে নাম পরিচয় জানা যায়নি।
নিহত অন্য দুজন হলেন, জেলা সদরের চর বলরামপুর গ্রামের জাহিদ হোসেন (১৮) ও হাজির হাট এলাকার মহিবুল ইসলাম (২২)। দুপুর একটার দিকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের সার্জন জাহেদী হাসান এই দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন।
প্রথম দফা গুলির ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা কিছুক্ষণ শহরে অবস্থান করে দুপুর ১টার দিকে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের প্রধান ফটকে ফিরে যান। এরপর তিনজনের মৃত্যুর খবরে আবার তাঁরা শহরে আসার চেষ্টা করেন। এ সময় শহরের বিভিন্ন দিক থেকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাঁদের ধাওয়া দেন। এতে দুপক্ষের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ পাওয়া যায়। এতে অন্তত আরও ২০ জন আহত হন। প্রায় ঘণ্টাখানেক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার পর আন্দোলনকারীরা শহর ত্যাগ করেন। এ সময় পুরো শহরের নিয়ন্ত্রণ নেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা প্রায় দুই ঘটনা শহরে মহড়া দিয়ে বিকেল ৪টার দিকে চয়ে যান। এর পর থেকে শহরের পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিকই ছিল। দুর্বৃত্তদের গুলির ঘটনার পর এক দফা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। দ্বিতীয় দফা আবার শিক্ষার্থীরা শহরে এলে উত্তেজনা তৈরি হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া পাল্টা পাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে দ্রুতই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। বিকেল ৪টার পর থেকে শহরের অবস্থা শান্ত আছে।