বরিশাল বোর্ডে টানা তিন বছর ধরে এগিয়ে মেয়েরা
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে টানা তিন বছর ধরে মেয়েরা পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে। এবার পাসের হার ৮৯ দশমিক ১৩। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ হাজার ১৪৫ জন। ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে এবার পাস করেছে ৭৮ হাজার ১৬৭ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ৪২ হাজার ৮৮৫ জন আর ছাত্র ৩৫ হাজার ২৮২ জন।
এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ হাজার ৫১৫ ছাত্রী আর ২ হাজার ৬৩০ ছাত্র। ফলাফল বিশ্লেষণ করে আরও জানা গেছে, এবার এই শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা কিছুটা কমেছে। গত বছর এ বোর্ডে পাসের হার ছিল ৯০ দশমিক ১৮, যা ছিল সারা দেশে সর্বোচ্চ পাসের হার। গত বছরের চেয়ে এবার ১৬৬ জন কম জিপিএ-৫ পেয়েছে।
বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুণ কুমার গাইন রোববার দুপুরে জানান, এবার পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা কিছুটা কমলেও সার্বিক ফলাফলের দিক থেকে ভালো ফল করেছে শিক্ষার্থীরা। ৪ থেকে ৫ পয়েন্টের নিচে জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা গত বছর ছিল ২১ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক ৪৬ শতাংশে। অপর দিকে ১ থেকে ২–এর নিচে জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমেছে। এবারের ফলাফলে গুণগত মান বেড়েছে।
মেয়েদের ধারাবাহিক সাফল্য
ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এই বোর্ডে তিন বছর ধরেই পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়ার ক্ষেত্রে মেয়েরা এগিয়ে আছে। ২০২২ সালে এই বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৬ হাজার ১৮৭ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ছিল ৩ হাজার ৫৮১ জন। ২০২৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৬৫৫ জনে। ওই বছর ২ হাজার ৬৫৭ ছাত্র জিপিএ-৫ পায়।
এই ধারাবাহিক সাফল্যকে ইতিবাচক অগ্রগতি মনে করছেন বরিশাল বিএম কলেজের সাবেক অধ্যাপক ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সনাক) বরিশাল জেলার সাবেক সভাপতি শাহ সাজেদা। তিনি বলেন, ‘নারীরা সুযোগ পেলে যে সব ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকতে পারে, এটা তারই উৎকৃষ্ট উদাহরণ। দেশে নারী শিক্ষা অগ্রগতি যতটা ত্বরান্বিত হবে, ততই জাতিগতভাবে আমরা সমৃদ্ধ হব। এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত।’
২২২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শতভাগ পাস
এবার এসএসসি পরীক্ষায় বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় ১ হাজার ৪৮৯টি বিদ্যালয় অংশগ্রহণ করেছিল। এর মধ্যে ২২২টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করেছে। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ২৩১। শতভাগ পাস করা বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বরিশাল জেলায় সর্বোচ্চ ৮৩টি, পিরোজপুরে ৫১টি, ভোলায় ২৭টি, ঝালকাঠিতে ২৬টি, বরগুনায় ২১টি ও পটুয়াখালীতে ১৪টি বিদ্যালয় রয়েছে। বরিশাল বোর্ডে এবার কেউ পাস করেনি, এমন কোনো বিদ্যালয় নেই।
বোর্ডে শীর্ষে পিরোজপুর
এসএসসিতে বরিশাল বোর্ডের পাসের হারের দিক থেকে এবার পিরোজপুর জেলা সবার শীর্ষে রয়েছে। আর শেষে রয়েছে পটুয়াখালী জেলা। গত বছর সবার শীর্ষে অবস্থান ছিল ভোলার, যার অবস্থান এবার পঞ্চম। গড় পাসের হার বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, পিরোজপুর জেলায় পাসের হার ৯০ দশমিক ৯৭। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বরিশাল জেলা। এই জেলায় পাসের হার ৯০ দশমিক ৬৪। পাসের হারে তৃতীয় অবস্থানে আছে ঝালকাঠি, পাসের হার ৯০ দশমিক ৫২। সবার শেষে থাকা পটুয়াখালী জেলার পাসের হার ৮৩ দশমিক ৮০।
বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার বেশি
এবারের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে এবার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাসের হার সবচেয়ে বেশি। জিপিএ-৫–এর দিক থেকেও এগিয়ে আছে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ বিভাগে মোট ৫ হাজার ২৩৫ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এ ছাড়া মানবিক বিভাগ থেকে ৭০২ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ২০৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।