পটিয়ার সাবেক সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের ৩৭৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
চট্টগ্রামের পটিয়ায় ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে গুলি করে ও ধারালো অস্ত্রসহ হামলা চালিয়ে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে আহত করার ঘটনায় স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ৭৯ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে আরও ২৫০-৩০০ জনকে। আজ সোমবার পটিয়া থানায় মামলাটি করেন পটিয়া আল জামিয়া আল ইসলামিয়া জমিরিয়া কাছেমুল উলুম মাদ্রাসার ছাত্র নুরুল হাসান।
মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদেও রয়েছেন। মামলায় তাঁকে প্রধান আসামি করা হয়। মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সদ্য অপসারিত উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল আলম, কাশিয়াইশ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল কাশেম, শোভনদণ্ডী ইউপির চেয়ারম্যান এহসানুল হক, কুসুমপুরা ইউপির চেয়ারম্যান জাকারিয়া ডালিম, হাবিলাসদ্বীপ ইউপির চেয়ারম্যান ফৌজুল কবির, হাঈদগাঁও ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক, কোলাগাঁও ইউপির চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম, জিরি ইউপির চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, দক্ষিণ ভূর্ষি ইউপির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সেলিম, পটিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর জসীম উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম, সরওয়ার কামাল; উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হাসান উল্লাহ চৌধুরী, যুবলীগ নেতা ডিএম জমির উদ্দিন ও প্রজ্ঞাজ্যোতি বড়ুয়া প্রমুখ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ৪ আগস্ট দুপুর ১২টায় একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া সদরের ডাকবাংলো মোড় থেকে মুন্সেফবাজার এলাকায় যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হাজারো শিক্ষার্থী। মুন্সেফবাজার এলাকায় পৌঁছাতেই সংসদ সদস্য মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর নির্দেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মিছিলে অতর্কিত হামলা চালান। মিছিল লক্ষ্য করে শিক্ষার্থীদের হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়া হয়। এতে অর্ধশতাধিক ছাত্র গুলিবিদ্ধ হন। এ ছাড়া ধারালো অস্ত্রের আঘাতেও অনেককে জখম করা হয়েছে। গুরুতর আহতদের চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে পটিয়ার শান্তিরহাট এলাকায়ও অ্যাম্বুলেন্সে হামলা চালান আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
পুলিশ জানায়, মামলার আসামিদের মধ্যে কাশিয়াইশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই মামলার পাশাপাশি গতকাল রোববার জায়গাজমি দখলের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন এক নারী। দুটি মামলায় তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জসীম উদ্দীন মামলার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলার আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।