টঙ্গীতে শ্রমিকদের অবরোধ প্রত্যাহার, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চলাচল শুরু

কারখানা বন্ধের প্রতিবাদ ও বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় গাজীপুরে টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

গাজীপুরে টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকায় শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে আবারও যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।

এর আগে আজ সকাল সাতটার দিকে কারখানা বন্ধের প্রতিবাদ ও বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন বিএইচআইএস অ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকেরা। পরে তাঁরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে তাঁরা সড়ক থেকে সরে যান।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের টঙ্গী জোনের সহকারী কমিশনার মেহেদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আমরা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের রাস্তা ছেড়ে দিতে অনুরোধ করি এবং বিভিন্নভাবে বোঝায় । পরে শ্রমিকেরা রাস্তা ছেড়ে দেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।’

শিল্প পুলিশ ও কারখানার শ্রমিকেরা জানান, টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকায় বিএইচআইএস অ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকদের ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন দেওয়ার কথা ছিল ৯ মার্চ। তবে বেতন না দেওয়ায় গতকাল সোমবার সকাল থেকে শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ করের। পরে বিকেলে শ্রমিকরা বাড়ি ফিরে যান। আজ সকালে শ্রমিকেরা এসে দেখেন অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের নোটিশ সাঁটিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ওই নোটিশ দেখে শ্রমিকেরা সকাল সাতটা থেকে কারখানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপযায়ে তাঁরা হোসেন মার্কেট ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নেন। এতে ওই মহাসড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ যানজটে দুর্ভোগে পড়েছেন ওই মহাসড়কে চলাচলকারীরা। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ ও থানা–পুলিশ গিয়ে শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া চেষ্টা করছেন।

কারখানা কর্তৃপক্ষের নোটিশে বলা হয়েছে, ‘এতদ্দ্বারা অত্র কারখানার সকল কর্মী ও কর্মচারীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, ১০ মার্চ অনুমান সকাল ১০টার সময় কর্মী ও কর্মচারীগণ নিয়মবহির্ভূতভাবে কাজ বন্ধ করে কারখানার অভ্যন্তরে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে। কর্মী ও কর্মচারীগণকে কাজে যোগদানের জন্য বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কর্মী ও কর্মচারীগণ কাজে যোগদান থেকে বিরত থাকে। কর্মী-কর্মচারীগণের এই ধরনের আচরণ অবৈধ ধর্মঘটের শামিল। কর্তৃপক্ষ মনে করছে উচ্ছৃঙ্খল কর্মী-কর্মচারীগণ কারখানাতে যেকোনো ধরনের নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে। যার কারণে কারখানা কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৩(১) ধারা মোতাবেক ১১ মার্চ হতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করল। পরবর্তীতে কারখানা খোলার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলে কারখানা খোলার তারিখ যথারীতি নোটিশের মাধ্যমে জানানো হবে।’

গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক ইসমাইল হোসেন বলেন, সকাল সাতটা থেকে শ্রমিকেরা বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকদের বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা চলছে।