রাজশাহীর ‘মরণ রাস্তা’র মোড়ে তিন ঘণ্টা ব্যবধানে দুই দুর্ঘটনা
রাজশাহী নগরের ছোট বনগ্রাম এলাকায় বারো রাস্তার মোড়ে আবার সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। আজ শুক্রবার বেলা একটার দিকে ও বিকেলে ওই মোড়ে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। বেলা একটার দিকে হওয়া সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ আহত না হলেও একটি প্রাইভেট কারের সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিকেল চারটার দিকে হওয়া সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ আহত হননি। তবে মোটরসাইকেলচালক রিকশাচালককে মেরে রক্তাক্ত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেলা একটার দিকে প্রাইভেট কারের চালক নগরের ভদ্রা এলাকা থেকে ওই মোড় দিয়ে নওদাপাড়া হয়ে বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে বারো রাস্তার মোড়ে তিনি প্রাইভেট কারটি সড়ক বিভাজকে লাগিয়ে দেন। ওই চালকের গাড়ির সামনে দিয়ে দ্রুতগতিতে আরেকটি প্রাইভেট কার চলে যায়।
বিকেলের দিকে দুর্ঘটনাকবলিত মোটরসাইকেলটি পূর্ব দিক থেকে আসছিল। ওই সময় আরেকটি অটোরিকশা ভদ্রার দিক থেকে এসে মোড়ে উঠতেই মোটরসাইকেলে লেগে যায়। এতে মোটরসাইকেলচালক পড়ে যান। পরে তিনি উঠে রিকশাচালকের ওপর চড়াও হয়ে কিলঘুষি দেন। এতে ওই রিকশাচালক আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন রিকশাচালককে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। আর ওই মোটরসাইকেলচালককে থানা–পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মোতালেব শেখ বলেন, তিন ঘণ্টা ব্যবধানে দুটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটল। দ্বিতীয় দুর্ঘটনায় কারও কোনো ক্ষতি শুরুতে না হলেও ওই মোটরসাইকেলচালক চড়াও হয়ে কিলঘুষি মেরে রিকশাচালককে আহত করেছেন। এ মোড়ে দ্রুত একটি গোলচত্বর করা দরকার। তা না হলে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে।
নগরের চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মতিয়ার রহমান বলেন, দুপুরের সড়ক দুর্ঘটনার কথা তিনি শুনেননি। তবে বিকেলে একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনা থেকে মারামারি হয়েছে। রিকশাচালককে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর মোটরসাইকেলের চালককে থানায় রাখা হয়েছে। রিকশাচালক কোনো অভিযোগ দিলে সেই অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেবেন।
চারটি বড় সড়ক এই মোড়ে মিলিত হয়েছে। ঘনঘন দুর্ঘটনা হয় বলে এলাকাবাসী মোড়টির নাম দিয়েছেন ‘মরণ রাস্তার’ মোড়। গত এক মাসে সেখানে ছোট-বড় অন্তত ১০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার ওই মোড়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পুরনজিত মহলদার নিহত হন। স্থানীয় এলাকাবাসী মোড়টিতে দ্রুত গোলচত্বর করার দাবি জানিয়েছেন। এ দাবিতে গত শুক্রবার মানববন্ধনও করেন তাঁরা। মোড়ে দুর্ঘটনার একাধিক ছবি দিয়ে সেই কর্মসূচির ব্যানার, বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনার ছবি দিয়ে ফেস্টুন বানিয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
দুপুরে ওই মোড়ে সড়ক দুর্ঘটনার খবর পেয়ে এই প্রতিবেদক মোড়টিতে যান। তখন মোড়ে একটি রাস্তায় গাড়ি রেখে মেরামত করা হচ্ছিল। সড়ক বিভাজকে লেগে প্রাইভেট কারের সামনের বাঁ পাশের চাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চালক স্থানীয় একজনের সহযোগিতা নিয়ে সেটি মেরামত করছিলেন।
শুক্রবার দুপুরে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার প্রাইভেট কারের চালক রাশেদুর রহমান বলেন, চারটি বড় রাস্তা এসে এখানে মিলিত হয়েছে। কিন্তু মিলিত স্থানটি একেবারে অল্প জায়গায়। একদিকের গাড়িকে অন্যদিকের চালক দেখতে পান না। এখানে মাঝখানে রাস্তা বড় করা দরকার।