গণমাধ্যম নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্যের জেরে ক্ষমা চাইলেন বিএনপির রুহুল কুদ্দুস

নাটোরে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের জনসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। আজ বুধবার দুপুরে শহরের আলাইপুরেছবি: প্রথম আলো

‘টিভি-পত্রিকায় খুনি হাসিনার ছবি ও বক্তব্য প্রচার করলে জ্বালিয়ে দেওয়া হবে’—এমন মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চেয়েছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রুহুল কুদ্দুস তালুকদার (দুলু)। আজ বুধবার দুপুরে নাটোরে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক জনসভায় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি।

আজ দুপুর ১২টার দিকে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান আসাদের সভাপতিত্বে শহরের আলাইপুরে জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে জনসভা শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রুহুল কুদ্দুস তালুকদার। তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মী ও নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘১৬ আগস্ট নাটোরে এক দলীয় সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে মুখ ফসকে টিভি-পত্রিকায় খুনি হাসিনার ছবি ও বক্তব্য প্রচার করলে জ্বালিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলাম। এ জন্য গণমাধ্যমকর্মীরা কষ্ট পেয়েছেন, ক্ষুব্ধ হয়েছেন। আসলে আমি কথাটা ওভাবে বলতে চাইনি। তবুও আমি ওই কথার জন্য হাজার হাজার মানুষের সামনে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি, ক্ষমা চাচ্ছি।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমি তাদের উদ্দেশে (কথাটি) বলতে চেয়েছিলাম, যারা শেখ হাসিনার পক্ষ নিয়ে সরকার টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিল; যারা ওই সরকারের খুন–গুমের ঘটনা গোপন করে প্রকৃত সত্য জনগণের সামনে তুলে ধরেনি। কিন্তু বক্তব্য দিতে গিয়ে “স্লিপ অব টাং” হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে গণমাধ্যমের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো।’

শেখ হাসিনাকে খুনি উল্লেখ করে রুহুল কুদ্দুস তালুকদার বলেন, ‘খুনি হাসিনার কারণে গণমাধ্যম বিডিআর বিদ্রোহের প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরতে পারেনি; সাগর-রুনি হত্যার মূল রহস্য জাতির সামনে তুলে ধরতে পারেনি। এখন আপনারা সবকিছু নির্ভয়ে লিখতে পারেন; প্রচার করতে পারেন। আমরা বাক্‌স্বাধীনতায় বিশ্বাসী।’

নাটোরে গত ১৫ বছর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীরা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে পারেনি বলে জানান রুহুল কুদ্দুস। তিনি বলেন, ‘সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তাই বলে আমরা পাল্টা প্রতিশোধ নেব না। আমাদের নেতা তারেক রহমান দলের সব নেতা-কর্মীকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন। কেউ যেন প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন না করে সে ব্যাপারে হুঁশিয়ার করেছেন। এ নির্দেশনা না মানলে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’  

সভায় আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম, সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজ, যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গণমাধ্যম নিয়ে উসকানিমূলক ওই বক্তব্যের পর রুহুল কুদ্দুস তালুকদারকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদ থেকে সরিয়ে নির্বাহী কমিটির সদস্য করা হয়েছে।