দাবি মেনে নেওয়ায় শ্রমিকেরা খুশি, গাজীপুরে কারখানার পরিস্থিতি স্বাভাবিক
গাজীপুরের ১৪টি কারখানা বাদে বাকি প্রায় সব পোশাক কারখানায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে ও উৎপাদনপ্রক্রিয়া স্বাভাবিকভাবে চলছে। আজ বুধবার সকাল থেকে পোশাক কারখানার কর্মীরা কর্মস্থলে গিয়ে কাজ শুরু করেছেন। দাবি মেনে নেওয়ায় খুশি কারখানার সাধারণ শ্রমিকেরা।
নানা সংকট ও অস্থিতিশীলতার কারণে জেলায় ১৪টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেসব কারখানা আজও বন্ধ আছে।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল থেকে শ্রমিকেরা কাজে ফিরেছেন। কোথাও কোনো ঝামেলার খবর পাওয়া যায়নি। তবে গত কয়েক দিনের পরিস্থিতির কারণে জেলার ১৪টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেগুলো আজও খোলেনি। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী দু-একদিনের মধ্যে এসব কারখানাও খোলা হবে।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর গাজীপুর জেলা কার্যালয়ের তথ্য মতে, পুরো জেলায় সব মিলিয়ে নিবন্ধিত কারখানা আছে ২ হাজার ৬৩৩টি। এর বাইরে অনিবন্ধিত কারখানা আছে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০টি। এসব কারখানায় শ্রমিক কাজ করেন প্রায় ২২ লাখ। পোশাক কারখানার এসব শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে রাজি হয়েছে মালিক পক্ষ। গতকাল সচিবালয়ে সরকার, বিজিএমইএ ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সব পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বিদ্যমান হাজিরা বোনাস ২২৫ টাকা করে বাড়তে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে আগামী অক্টোবরের মধ্যে সব কারখানায় সরকার ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন করা হবে। আর শ্রমিকদের সব বকেয়া মজুরি পরিশোধ করতে হবে ১০ অক্টোবরের মধ্যে। এতে খুশি হয়েছেন সাধারণ শ্রমিকেরা।
গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকার এম এম নিটওয়্যার কারখানার শ্রমিক সোলাইমান হোসেন বলেন, ‘আমরা অযথা কোনো ঝামেলা করতে চাই না। সারা মাস কাজ করে যখন বেতন পাই না, হাজিরা-বোনাস পাই না, তখন বাধ্য হয়ে শ্রমিকদের রাস্তায় নামতে হয়।’
জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে একটি পক্ষ ইন্ধন দিচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।। এ ছাড়া এই সেক্টরকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রয়েছে। সেই ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করতে হবে।
গাজীপুরের স্টাইলিশ গার্মেন্টসের চেয়ারম্যান ও বিজিএমইয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘গার্মেন্টস শিল্প খুবই টাইট শিডিউলে চলে। আমরা নিজস্ব ব্যবস্থায় নিরাপত্তা জোরদার করেছি। বহিরাগতরা কারখানায় হামলা করছে। পোশাকশিল্প রক্ষা করতে অন্তর্বর্তী সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠিন হতে হবে। দেশি-বিদেশি নানা চক্র এই শিল্প খাতে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। শিল্পকে বাঁচাতে না পারলে আমাদের দেশও পিছিয়ে যাবে।’
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল-২–এর টঙ্গী জোনের সহকারী পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, টঙ্গী ও গাজীপুর জেলার আশপাশের কোথাও কোনো শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটেনি। শ্রমিকেরা শান্তিপ্রিয়ভাবে আজ সকালে কারখানায় কাজে যোগ দিয়েছেন।