কাঞ্চন পৌরসভা নির্বাচনে সকালেই ভোটারদের দীর্ঘ সারি

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভা নির্বাচনে আজ সকালে কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। ৫২ নম্বর হাটাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে সকাল সাড়ে আটটার দিকেছবি: দিনার মাহমুদ

প্রতিটি কেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেট আর ‘নজিরবিহীন’ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ বুধবার সকাল আটটায় শুরু হয়ে বিকেল চারটা পর্যন্ত ইভিএমে চলবে এই ভোট গ্রহণ। সকালে ভোটের শুরুতেই কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।

এ নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন দুই প্রার্থী। তাঁরা হলেন কাঞ্চন পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য সাবেক পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম (জগ প্রতীক) এবং পৌর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি (বহিষ্কৃত) ও সাবেক মেয়র আবুল বাশার (মোবাইল ফোন প্রতীক)। এ ছাড়া ২৭ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ৪ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আছেন।

স্থানীয় সরকার পর্যায়ের নির্বাচনে বিএনপি দলীয়ভাবে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও রফিকুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতা এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তাঁরা সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের মধ্য থেকে আজ পৌরসভার ১৩টি ভেন্যুর ১৯টি কেন্দ্রে ৪০ হাজার ৭৯৮ জন ভোটার নিজেদের পছন্দের জনপ্রতিনিধি বেছে নেবেন।

সকাল আটটায় সরেজমিন পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের হাটাব প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ঘুরে ভোটারদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। ভোটারদের পাশাপাশি কেন্দ্রটিতে পুলিশের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। কেন্দ্রটিতে পুরুষের তুলনায় নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল বেশি। ভোটের পরিবেশ নিয়ে ভোটারদের কোনো প্রশ্ন না থাকলেও নারী ও বৃদ্ধ ভোটাররা ইভিএমে ভোট দিতে গিয়ে বিড়ম্বনার কথা জানিয়েছেন।

এই পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন দুই প্রার্থী। তাঁরা হলেন কাঞ্চন পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য সাবেক পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম (জগ প্রতীক) এবং পৌর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি (বহিষ্কৃত) ও সাবেক মেয়র আবুল বাশার (মোবাইল ফোন প্রতীক)।

সকাল সাড়ে আটটায় টেকপাড়া এলাকার প্রবীণ ভোটার মিজানুর রহমান ভোট দিয়ে কেন্দ্রটির বাইরে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে চেঁচামেচি করছিলেন। মিজানুরের অভিযোগ, আঙুলের ছাপ না মেলায় তাঁকে ভোট দিতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। প্রায় ১০ মিনিট চেষ্টার পরও আঙুলের ছাপ না মেলায় বাইরে থেকে হাত ধুয়ে আবার তাঁকে ভোট দেওয়ার চেষ্টা করতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলেও বিড়ম্বনার বিষয়টি তাঁর ভালো লাগেনি।

হাটাব প্রাথমিক বিদ্যালয়টির নারী কেন্দ্রে মোট ১ হাজার ৫৮৩ জন ভোটার আছেন। এর মধ্যে সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত কেন্দ্রটির ৬টি ভোটকক্ষে মোট ৩৮টি ভোট পড়েছে। কেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি থাকলেও তুলনামূলক কম ভোট পড়ার কারণ জানতে চাইলে কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তা পল্লব বালা বলেন, ‘মানুষ ইভিএমে ভোট দিতে অভ্যস্ত নয়, এ কারণে কিছুটা ধীরগতিতে ভোট পড়ছে।’

মানুষ ইভিএমে ভোট দিতে অভ্যস্ত নয়, এ কারণে কিছুটা ধীরগতিতে ভোট পড়ছে।
হাটাব প্রাথমিক বিদ্যালয়টির ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা পল্লব বালা

এদিকে ভোট গ্রহণ সুষ্ঠু করতে ব্যাপক প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ইস্তাফিজুল হক আকন্দ। প্রথম আলোকে তিনি জানান, ভোট গ্রহণ সুষ্ঠু করতে প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মাত্র ১৩টি ভেন্যুর জন্য প্রায় ৪৫০ পুলিশ, ৩ প্লাটুন বিজিবি, ২ প্লাটুন র‍্যাব ও আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন, যা রীতিমতো নজিরবিহীন। অবাধ ও প্রশ্নহীন ভোট গ্রহণ নিশ্চিত করতেই প্রশাসনের এমন আয়োজন।

এখন পর্যন্ত এ নির্বাচনে বড় ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। তবে ভোটারদের হুমকি, নির্বাচনে বহিরাগতদের প্রভাব, অবৈধ অস্ত্র ও টাকা দিয়ে ভোট কেনার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন মেয়র প্রার্থীরা।