গাজীপুরে বেক্সিমকোসহ তিন কারখানায় শ্রমিক বিক্ষোভ, ৫টি বন্ধ ঘোষণা
আগস্ট মাসের বেতনের দাবিতে গাজীপুরের সারাবো এলাকায় বিক্ষোভ করছেন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকে কালিয়াকৈরের চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেছেন তাঁরা। এতে ওই সড়কের উভয় দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রী ও চালকেরা।
এ ছাড়া আজ সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত গাজীপুরের আরও দুই কারখানায় শ্রমিক বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। বিক্ষোভ–আন্দোলনের জেরে ইতিমধ্যে জেলার পাঁচটি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
জেলার শিল্প পুলিশ ও শ্রমিকদের সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর থানার অধীনে সারাবো এলাকায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে বেশ কয়েকটি শিল্পকারখানা আছে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে গত আগস্ট মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়নি। ওই মাসের বেতনের দাবিতে কয়েক দিন ধরে কর্তৃপক্ষকে চাপ দিচ্ছিলেন শ্রমিকেরা।
এমন প্রেক্ষাপটে গতকালের মধ্যে বেতন পরিশোধের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গতকাল কিছু শ্রমিক বেতন পেলেও অধিকাংশই পাননি। তাই গতকাল সন্ধ্যার পর তাঁরা বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন, যা রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। একই দাবিতে আজ সকাল সাড়ে সাতটা থেকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন তাঁরা।
এদিকে সদর উপজেলার বাংলাবাজার এলাকার পারটেক্স বেভারেজ লিমিটেড ও শ্রীপুরের যমুনা ফেব্রিকস লিমিটেডের শ্রমিকেরাও বিভিন্ন দাবিতে আজ সকাল থেকে বিক্ষোভ করছেন।
গত মঙ্গলবারের শ্রমিক আন্দোলনের জেরে ইতিমধ্যে জেলার পাঁচটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এগুলো হলো গাজীপুর গিলারচালা এলাকার ফমকম ফ্যাশন, অ্যাপারেল-২১ লিমিটেড, ফমকম প্রিন্টিং ও এমব্রয়ডারি, কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকার নায়াগ্রা টেক্সটাইল ও সদর উপজেলার শিরিরচালা এলাকার এস এম নিটওয়্যার লিমিটেড কারখানা।
এস এম নিটওয়্যার লিমিটেড কারখানার ডিজিএম ইশরার মুহতাসিমের সই করা নোটিশে বলা হয়, আলোচনা করে শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া হলেও আন্দোলন অব্যাহত থাকায় কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর শিল্প পুলিশের (জোন-২) পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, বেক্সিমকো কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা বেতন দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু শ্রমিকেরা তাদের সময়ই দিচ্ছেন না। আজ দুপুরের পর সবার বেতন পরিশোধ করা হবে বলে তিনি আশা করছেন। অন্য যেসব কারখানায় আন্দোলন চলছে, সেখানে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।