জয়পুরহাটে উত্তরা মেইল ট্রেনের বগিতে আগুনের ঘটনাটিকে নাশকতা বলছে পুলিশ
জয়পুরহাটে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা পার্বতীপুরগামী উত্তরা এক্সপ্রেস মেইল ট্রেনের একটি বগিতে আগুনের ঘটনাটিকে ‘নাশকতা’ বলে উল্লেখ করেছে পুলিশ। আজ শনিবার বেলা আড়াইটায় প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন সান্তাহার রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুক্তার হোসেন। এ ঘটনায় সান্তাহার রেলওয়ে থানার পুলিশের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ওসি মুক্তার হোসেন বলেন, ট্রেনটি গতকাল শুক্রবার রাতে জামালগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে জয়পুরহাট রেলস্টেশন অভিমুখে ছেড়ে গেলে দুর্বৃত্তরা একটি বগিতে আগুন দেয়। জয়পুরহাট রেলস্টেশনে বগিতে আগুন জ্বলতে দেখে রেলওয়ে ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আগুন নেভান। তবে ওই বগিতে থাকা যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এটি নাশকতার ঘটনা বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
জয়পুরহাট রেলস্টেশন ও রেলওয়ে থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ট্রেনটি জামালগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে জয়পুরহাট রেলস্টেশনের দিকে ছেড়ে যায়। চলন্ত ট্রেনের একটি বগিতে আগুন জ্বলতে থাকে। ট্রেনটি জয়পুরহাট রেলস্টেশনে পৌঁছানোর পর রেলওয়ে ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিভিয়ে ফেলেন। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ট্রেনের ওই বগিতে যাত্রী হিসেবে ছিলেন রমজান আলী (৬০) নামের এক ব্যক্তি। তিনি আক্কেলপুর উপজেলার সরস্বতীপুর গ্রামের বাসিন্দা ও কাপড় ব্যবসায়ী।
রমজান আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘উত্তরা ট্রেনের ওই বগিতে আমিসহ ১০ থেকে ১২ যাত্রী ছিলাম। পাঁচ থেকে ছয়জন কাপড় নিয়ে পার্বতীপুরে যাওয়ার উদ্দেশে তিলকপুর রেলস্টেশনে উত্তরা ট্রেনের ওই বগিতে উঠেছি। ট্রেনটি আক্কেলপুর ও জামালগঞ্জ রেলস্টেশন ছেড়েছে। তখন আমাদের সবার চোখে ঘুমঘুম ভাব ছিল। জয়পুরহাট রেলস্টেশনে পৌঁছার আগে বগি ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। দেখি, আমাদের আসনের কয়েকটি আসন পরে একটি আসনে আগুন জ্বলছে। তখন পেট্রলের গন্ধও পাচ্ছিলাম। আগুন বাড়তে থাকায় আমরা ভয় পেয়েছিলাম। এ ঘটনার ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে ট্রেনটি জয়পুরহাট রেলস্টেশনে যাত্রা বিরতি করে। তখন আমরা দ্রুত রেলস্টেশনে নেমে পড়ি। পরে লোকজন এসে দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলেন। আমাদের বগিতে থাকা যাত্রীবেশে কেউ ওঠে আগুন দিয়েছে। যদি ট্রেনটি রেলস্টেশনে পৌঁছাতে একটু দেরি করত, তাহলে ধোঁয়ায় নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আমরা মারা যেতাম।’
জয়পুরহাট রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার রেজাউল ইসলাম বলেন, আগুন লাগানো অবস্থায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে ট্রেনটি রেলস্টেশনে আসে। আগুনে দু-একটি আসন পুড়ে গেছে। রেলওয়ের লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় আগুন নেভানো হয়েছে। পরে ট্রেনটি রেলস্টেশন ছেড়ে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেয়।