বাবা–মায়ের পূজা দিতে শ্মশানে যাচ্ছিলেন, পথেই প্রাণ গেল বাস চাপায়

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বাসের ধাক্কায় এক ব্যক্তির মৃত্যুর পর সড়কে লোকজনের ভিড়। আস সকাল সাড়ে নয়টায় বাঁশখালীর বৈলগাঁওয়ের বাইন্যার টেক এলাকায়ছবি: সংগৃহীত

হাতে ধূপকাঠি ও মোমবাতি নিয়ে আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার চট্টগ্রামের বাঁশখালীর কালীপুর ইউনিয়নের গুনাগরী থেকে সাধনপুর ইউনিয়নের বৈলগাঁও এলাকায় মা-বাবার শ্মশানে পূজা দিতে যাচ্ছিলেন অবিনাশ ধর (৭৮)। কিন্তু কে জানত, শ্মশানে পৌঁছাতে হবে তাঁকে লাশ হয়ে।

ঘর থেকে বের হয়ে বাঁশখালীর বৈলগাঁওয়ের বাইন্যার টেক পর্যন্ত আসেন অবিনাশ। এ সময় চট্টগ্রাম শহরমুখী একটি বাস অপর একটি অটোরিকশাকে পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ার সময় অবিনাশকে ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলে মারা যান তিনি। এতে করে মা-বাবার শ্মশানে পূজা দেওয়া হলো না অবিনাশের।

নিহত অবিনাশ ধর কালীপুর ইউনিয়ন ১ নম্বর ওয়ার্ডের নাথপাড়ার মৃত বিপীন চন্দ্র ধরের ছেলে। তাঁর দুই ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে।

সাধনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কে এম সালাহউদ্দিন কামাল বলেন, মা-বাবার শ্মশানে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনায় অবিনাশের মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

দুর্ঘটনায় নিহত অবিনাশ ধরের ছেলে সুমন ধর খবর পেয়ে ছুটে যান বাঁশখালী থানার রামদাশ মুন্সিরহাট পু‌লিশ ফাঁড়িতে। বাবার এমন মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি
ছবি: সংগৃহীত

সকালে দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে মানুষের ভিড় জমে যায়। পুলিশ দ্রুত এসে লাশ রামদাশ মুন্সিরহাট পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে ছুটে যান নিহত অবিনাশ ধরের ছেলে সুমন ধর। মুঠোফোনে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘ধূপকাঠি ও মোমবাতি নিয়ে আমার বাবা শ্মশানে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মারা গেছেন। এখন তাঁর শ্মশানে আমাকে যেতে হবে। এর চেয়ে কষ্টের আর কী আছে।’

বাঁশখালী থানার রামদাশ মুন্সিরহাট পু‌লিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) তপন বাগচী বলেন, ‘রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটার সময় অবিনাশ গাড়ির ধাক্কায় নিহত হয়েছেন। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করি। ঘটনাস্থলে ধূপকাঠি ও মোমবাতি পাওয়া গেছে। তবে দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি পালিয়ে গেলেও অটোরিকশাটি জব্দ করা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষ করে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’