সুফিয়া বেগমের (৬০) ঘরের ভিটার মাটি ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে ধুয়ে গেছে। সে ঘরে এখনো পানি জমে আছে। থাকতে হচ্ছে সেখানেই। ছেলেটাও অসুস্থ, ঘরে খাবারও ফুরিয়ে এসেছে। এমন সময়ে আজ সোমবার সকালে প্রথম আলো ট্রাস্টের ত্রাণসহায়তা নিতে এসেছিলেন তিনি।
ত্রাণ পেয়ে সুফিয়া বেগম বলেন, ‘বাঁধ ভাইঙ্গা পানির স্রোত ঘরে ঢুকছে। ঘরের ভিডার মাটি ধুয়া গেছে। এহন ঘরে ঘুমাইতে, রান্নাবান্না নিয়া বড় কষ্টে আছি। পোলাডা অসুস্থ। কোনো কাজ করতে পারে না। আইজ তোমরা এই ভাঙন এলাকায় আইছো। আমাগো সাহায্য করছে। সাহায্য পাইয়া খুব খুশি অইছি। কয়টা দিন খাইতে পারুম।’
আজ সকালে পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের উত্তর পাঙ্গাশিয়া ও রায়গঞ্জ গ্রামে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ৭৫ নারী-পুরুষের মধ্যে প্রথম আলো ট্রাস্টের ত্রাণসহায়তা বিতরণ করেন বন্ধুসভার সদস্যরা। ত্রাণের প্যাকেটে ছিল চাল, ডাল ও আলু।
পাঙ্গাশিয়ার রায়গঞ্জ গ্রামের হাজেরা বিবি (৭০) বলেন, ‘বাঁধ ছুইট্টা (ভেঙে) গেছে। এহনো জোয়ারের পানি ঢোকে। রাস্তায়ও পানি। আমি বুড়া মানুষ। হেরপরও সাহায্য নিতে পানির মধ্য দিয়া কষ্ট কইরা আইতে হইছে।’
প্রথম আলো বন্ধুসভার ত্রাণসহায়তার কাজে সহযোগিতা করতে এগিয়ে এসেছেন ওই এলাকার শিক্ষক মো. জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এলেই ইউনিয়নের পায়রা নদের তীরের এই বাঁধ বিধ্বস্ত হয়। প্রথমে বাঁধ উপচে পানি ঢোকে, পরে বাঁধ ভেঙে পানিতে প্লাবিত হয় ইউনিয়নটি। ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাঁধের পাড়ের বাসিন্দারা। দুর্গম পথ হওয়ায় এখানে এখনো অনেকেই সহায়তা নিয়ে আসেননি। প্রথম আলো এখানে এসেছে এতে সবাই খুশি।
ত্রাণ বিতরণের সময় প্রথম আলো বন্ধুসভার পটুয়াখালীর সভাপতি মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, সদস্য মেজবাহউদ্দিন, সুস্মিতা মণ্ডল, প্রাপ্তি, মন্দিরা, স্থানীয় সমাজসেবক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও প্রথম আলোর পটুয়াখালী প্রতিনিধি শংকর লাল দাস উপস্থিত ছিলেন।