নড়াইলে যুবলীগ কর্মী হত্যার ৪৭ ঘণ্টায়ও মামলা হয়নি, গ্রেপ্তার ৫
নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় যুবলীগ কর্মী আজাদ শেখ (৩২) হত্যাকাণ্ডের ৪৭ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো মামলা হয়নি। আজ শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত নিহত আজাদ শেখের পরিবারের কেউ মামলা করতে থানায় যাননি। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে আটক পাঁচজনকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ তাসমীম আলম প্রথম আলোকে বলেন, আজাদ শেখ হত্যাকাণ্ডে এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। আজ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত আজাদ শেখের পরিবারের কেউ মামলা করতে থানায় আসেননি। তাঁরা এলে মামলা রেকর্ড করা হবে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে আটক পাঁচজনকে পুলিশ ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।
আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার পেড়লী গ্রামের চৌরাস্তা বাজার এলাকায় আজাদ শেখকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও শাবল দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করা হয়। তাঁকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
আজাদ শেখ কালিয়া উপজেলার পেড়লী গ্রামের সালাম শেখের ছেলে। তিনি যুবলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। মামলার বিষয়ে কথা বলতে আজাদ শেখের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁদের পাওয়া যায়নি।
পুলিশ ও এলাকার বাসিন্দারা জানান, কালিয়া উপজেলার পেড়লী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জারজিদ মোল্যা ও তাঁর অনুসারীদের সঙ্গে সাবেক চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আনিসুল ইসলাম ওরফে বাবু শেখ ও তাঁর অনুসারীদের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এলাকায় মোল্যা ও ভূঁইয়া বংশের নেতৃত্ব দেন জারজিদ মোল্যা এবং শেখ বংশের নেতৃত্ব দেন বাবু শেখ। নিহত আজাদ শেখ ছিলেন বাবু শেখের অনুসারী।
এলাকাবাসী জানান, কয়েক দিন আগে ভূঁইয়া বংশের লোকজনকে পেড়লী বাজার থেকে অপমান করে বের করে দেন বাবু শেখের লোকজন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। গত বৃহস্পতিবার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পেড়লী বাজার থেকে ট্রলারে করে খুলনায় যুবলীগের ‘তারুণ্যের জয়যাত্রা’ সমাবেশে যোগ দিতে যান আজাদ শেখ। সেখান সন্ধ্যায় পেড়লী বাজারে ফিরে তিনি ইঞ্জিনচালিত ভ্যানে করে বাড়িতে ফিরছিলেন। সন্ধ্যা সাতটার দিকে পেড়লী গ্রামের চৌরাস্তা বাজার এলাকায় প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁকে ভ্যান থেকে নামিয়ে হাতুড়ি ও শাবল দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আজাদ শেখের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত লোকজন প্রতিপক্ষের সাতটি বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় কয়েকটি বাড়িতে লুটপাট করা হয়।