পরকীয়ার অভিযোগ এনে দুই ইউপি সদস্যকে মারধর করলেন যুবদল নেতা
রাজবাড়ী সদর উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) দুই সদস্যকে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের মধ্যে একজন নারী সদস্য আছেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে বসন্তপুর ইউনিয়নের মহারাজপুর ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আজ শনিবার দুপুরে রাজবাড়ী সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই নারী।
গতকাল শুক্রবার তাঁদের নির্যাতনের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ওই নারী ইউপি সদস্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অভিযোগ, যুবদলের স্থানীয় এক নেতা ও তাঁর সহযোগীরা মারধর ও নির্যাতন করেছেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত রায়হান খান বসন্তপুর ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক। থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগে রায়হানসহ ৪-৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে ওই নারী ইউপি সদস্যের সঙ্গে দুর্গাপূজা দেখতে যান আরেক ইউপি সদস্য। রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওই নারীকে মোটরসাইকেলে করে বাড়িতে নামিয়ে দিতে আসেন তিনি। এ সময় রায়হান ও তাঁর লোকজন পরকীয়ার অভিযোগ এনে দুই ইউপি সদস্যকে তুলে নিয়ে যান স্থানীয় মহারাজপুর ব্রিজ এলাকার একটি দোকানে। সেখান দুজনকে একই রশিতে বেঁধে লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়। কয়েকজন মুঠোফোনে সেই মারধরের ভিডিও ধারণ করেন। ৫ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও গতকাল সন্ধ্যায় ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, কাঠের লাঠি দিয়ে দুজন ইউপি সদস্যকে মারধর করছেন রায়হান। তাঁর সঙ্গে আরও দুই যুবক মারধরে অংশ নেন। মারধরের পাশাপাশি তাঁদের লক্ষ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হচ্ছে। একপর্যায়ে ওই নারী সদস্যের গলা থেকে সোনার চেইন ও পায়ের নূপুর খুলে নেন রায়হান। আরেক যুবক লাঠি হাতে তেড়ে এসে গালাগালি করে আবারও তাঁদের মারধর করতে থাকেন।
এ সম্পর্কে আজ শনিবার সকালে রায়হান খান মুঠোফোনে বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটার দিকে তাঁদের আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান এলাকার যুবকেরা। পরে স্থানীয় এক দোকানে তাঁদের আটকে আমাকে খবর দেন তাঁরা। এ সময় স্থানীয় যুবকেরা তাঁদের মারধর করেন, এ সময় আমিও মারধর করি।’
অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘দুই ইউপি সদস্যের নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে দেখেছি। শুনেছি, সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাঁদের উদ্ধার করেছিলেন। নারী ইউপি সদস্য লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’