নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার-প্রচারণার নির্ধারিত সময়ের আগেই জনসভায় ভোট চাওয়ায় নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী একাংশ) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিমের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি।
আজ রোববার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গঠন করা নোয়াখালী-১ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মুহাম্মদ আকবর হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। চিঠিতে ৯ ডিসেম্বর সশরীর অথবা উপযুক্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে হাজির হয়ে এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নোয়াখালী-১ আসনের পাল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রচারণামূলক বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী এইচ এম ইব্রাহিম। ওই সময় তাঁর উপস্থিতিতে নেতা-কর্মীরা তাঁর জন্য ভোট প্রার্থনা করে বক্তব্য দেন, যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয় এবং নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির নজরে আসে। প্রার্থীর এমন কর্মকাণ্ড জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা ২০০৮ বিধি ৬(গ) ও ১২–এর বিধান লঙ্ঘন করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৯ ডিসেম্বর বেলা ১১টার মধ্যে অনুসন্ধান কমিটির কার্যালয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা ২০০৮-এর ১২ ধারা অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা দল মনোনীত ব্যক্তি বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাঁদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি ভোট গ্রহণের নির্ধারিত দিনের তিন সপ্তাহ আগে কোনো ধরনের নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে পারবেন না। এ ছাড়া ৬(গ) ধারায় কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা দল মনোনীত ব্যক্তি বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাঁদের পক্ষে সভা করতে চাইলে অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে অনুমতি নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
অনুসন্ধান কমিটির ব্যাখ্যা তলবের চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সন্ধ্যার পর তিনি চিঠি পেয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, তিনি এক বাড়িতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে এক জায়গায় দলের অনেক নেতা-কর্মীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। তখন সৌজন্যের খাতিরে দাঁড়িয়ে তাঁদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনে নির্বাচন–পূর্ব অনিয়ম নিষ্পত্তি করতে প্রতিটি আসনের জন্য একজন বিচারককে প্রধান করে ‘নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। তাঁরা বিষয়টি দেখছেন।