নতুন বাংলাদেশ গড়তে তরুণ প্রজন্মকে সহযোগিতা করতে হবে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

সুনামগঞ্জে সিপিডির সংলাপে বক্তব্য রাখছেন অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের একটি রেস্তোরাঁর হলরুমে
ছবি: প্রথম আলো

অন্তর্বর্তী সরকারের শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘দেশ একটা নতুন পরিস্থিতির ভেতর আছে। তাই নতুন বাংলাদেশ গড়তে তরুণ প্রজন্মকে সহযোগিতা করতে হবে। তরুণ প্রজন্ম কী করতে পারে, তারা সেটা দেখিয়েছে। আমাদের সামনে যে সম্ভাবনা, সেটি কাজে লাগাতে হবে।’

সুনামগঞ্জে আজ বৃহস্পতিবার ‘যুব কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে স্থানীয় কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা’ শীর্ষক সংলাপে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য কথাগুলো বলেছেন। শহরের একটি রেস্তোরাঁর হলরুমে সিপিডির উদ্যোগ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতায় এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার লোকজন অংশ নেন।

সংলাপ অনুষ্ঠানে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। সমাপনী বক্তব্য দেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।

মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত না হলে বৈষম্য বাড়বে মন্তব্য করে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য তাঁর আলোচনায় বলেন, নতুন পরিস্থিতিতে মানসম্মত শিক্ষাই দেশকে দেশের ভেতরে এবং দেশের বাইরে তার অবস্থান নির্ধারণ করে দেবে। তাই শিক্ষার সংস্কারে গুরুত্ব দিতে হবে বেশি। তিনি আরও বলেন, ‘যেকোনো উন্নয়নের কথা যদি আমরা ভাবি, তাহলে তার মূল ভিত্তি হচ্ছে শিক্ষা। তবে শিক্ষার যথাযথ মান আমরা পাইনি। যে শিক্ষাই দেওয়া হোক, সেটার সঙ্গে বাজারের একটা সামঞ্জস্য থাকা বড় বিষয়। এ ক্ষেত্রে বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষার একটা বড় ভূমিকা রয়েছে।’

সংলাপে নির্ধারিত আলোচক ছিলেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, সুনামগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আজিজুল শিকদার, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ইভা রায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রোগ্রাম ম্যানেজার (শিক্ষা) জুঁই চাকমা এবং জেলা ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশনের উপব্যবস্থাপক এম এন এম আসিফ।

অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘সুশাসন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহির অভাব আমাদের আছে। এ ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে হবে। এটা সামগ্রিক পরিবর্তন। সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষাব্যবস্থাকে কীভাবে জাতীয়ভাবে এগিয়ে নেওয়া হবে, সেটি নিয়ে ভাবতে হবে। আমাদের সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে প্রচলিত কৃষি, মৎস্য ও পর্যটনকে বিবেচনায় নিয়ে চিন্তা করতে হবে। এ জন্য স্থানীয়ভাবে টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নের কথা ভাবছেন তাঁরা।

সংলাপের মুক্ত আলোচনা পর্বে বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ পরিমল কান্তি দে; সুনামগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ জ্যোতির্ময় দাস; টিআইবির সুনামগঞ্জ সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সদস্য রুনা লেইস, রমেন্দ্র কুমার দে; শিক্ষক মো. আবদুস শহীদ, ইয়াকুব শাহরিয়ার; সাংবাদিক স্বপন কুমার বর্মণ; নারী উদ্যোক্তা তৃষ্ণা আক্তার; শিক্ষার্থী নুশরাত জাহান, পার্থ সাহা, ইশতিয়াক আহমেদ, ওবায়দুল হক, মাজেদুল হক প্রমুখ। সকাল ১০টায় শুরু হয়ে বেলা ১টায় সংলাপ শেষ হয়।