স্বামীর সঙ্গে ঝগড়ার পর সন্তানদের নিয়ে মায়ের বিষপান, তিন সন্তানের মৃত্যু
স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে তিন শিশুসন্তানকে নিয়ে বিষ পান করেন যমুনা বেগম (৩৫)। অসুস্থ অবস্থায় সবাইকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিন শিশুর মৃত্যু হয়। মায়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাক ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামে আজ রোববার সকালে এ ঘটনা ঘটেছে। যমুনার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম পুলিশি হেফাজতে আছেন। মৃত তিন শিশু হলো শাকিবা (১৪), তামজিদ (১৩) ও শাহেদ (৮)।
যমুনা বেগমের ছোট ভাই মমিন আহমদ জেলা সদর হাসপাতালে আজ দুপুরে অভিযোগ করেন, তাঁর বোনের স্বামী জাহাঙ্গীর আলম জুয়া খেলতেন। এ নিয়ে ঝগড়ার জেরে তাঁর বোনকে মারধর করতেন। স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তাঁর বোন এমনটা করেছেন বলে তিনি ধারণা করছেন।
ফেনারবাক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ফেনারবাক গ্রামের বাসিন্দা একলিমুর রাজা চৌধুরী বলেন, জাহাঙ্গীর আলম (৪০) পেশায় জেলে। হাওরে মাছ ধরেন এবং মাছের ব্যবসা করে সংসার চালান। পারিবারিক কলহ ছিল স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। শনিবার সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীর আলম বাড়িতে আসার পর তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এরপর রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে আবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হলে একপর্যায়ে যমুনা বেগম তিন সন্তানকে নিয়ে ঘরের ভেতর কীটনাশক পান করেন। শিশুদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা গিয়ে বিষয়টি বুঝতে পেরে তাঁদের জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। কিন্তু অবস্থা গুরুতর হওয়ার পর তাঁদের পাঠানো হয় সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে।
সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, দুপুর ১২টার দিকে তাঁদের হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে আনার আগেই তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। যমুনা বেগমের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলমের আত্মীয় মুজিবুর রহমান বলেন, পারিবারিক কিছু বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। কিন্তু যমুনা এমন করতে পারেন, এটি তাঁরা চিন্তা করতে পারেননি।
জামালগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিলীপ কুমার দাশ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে জেনেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তিন শিশুর লাশ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে আছে।