পাবনা-৩ আসনের (চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া-ফরিদপুর) স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তাঁর কর্মী–সমর্থকেরা গণসংযোগ ও পথসভা করার সময় নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা তাঁদের ওপর হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শনিবার সকাল ১০টায় চাটমোহর উপজেলা সদরের নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ এ অভিযোগ করেন। গতকাল শুক্রবার রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে তিনি দাবি করেন।
এ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মকবুল হোসেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তাঁর কর্মী–সমর্থকদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘গত রাতে নৌকার সমর্থকদের হামলা থেকে জানে বেঁচে আসছি। হয়তো শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইনি, তবে জীবন ফিরে পাইছি। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
আব্দুল হামিদ জানান, গতকাল রাতে চাটমোহর উপজেলার কাটাখালি, খৈরাশ, বামনগ্রাম ও কামালপুরে গণসংযোগ ও পথসভা ছিল। প্রথমে তিনি কাটাখালি ও খৈরাশ এলাকায় গণসংযোগ করতে গেলে বাধার সম্মুখীন হন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী–সমর্থকেরা ৩০ থেকে ৪০টি মোটরসাইকেলে এসে তাঁদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তাঁদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। তাঁরা লাঠিসোঁটা নিয়েও তাঁদের ওপর আক্রমণ চালান। এ সময় তাঁরা জীবন বাঁচাতে দ্রুত অন্য পথ ধরে ওই এলাকা ত্যাগ করেন।
আবদুল হামিদ অভিযোগ করে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং পুলিশের চাটমোহর সার্কেলের প্রধানকে একাধিকবার ফোন করেছিলাম। তাঁরা ফোন ধরেননি, এমনকি আমাকে কোনো সহযোগিতাও করেননি।’
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল হামিদ আরও বলেন, প্রায় প্রতিদিনই তিনি ও তাঁর কর্মী-সমর্থক–অনুসারীরা নানা হুমকি পাচ্ছেন। নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তিনি প্রশাসনের কাছে কোনো অভিযোগ দিলে সেটা গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নেওয়া হয় না। একের পর এক নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর, নেতা–কর্মীদের মারধর ও হুমকি দেওয়া হলেও তিনি কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।
সংবাদ সম্মেলনে চাটমোহরের গুনাইগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রজব আলী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সাইদুল ইসলামসহ আব্দুল হামিদের কর্মী-সমর্থকেরা উপস্থিত ছিলেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তাঁর কর্মী–সমর্থকদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মকবুল হোসেন বলেন, ‘কোথাও কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। হামলা হলে কেউ না কেউ আহত হতো। স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগ সঠিক নয়। আমরা নেতা-কর্মীদের আচরণবিধি মেনে চলতে নির্দেশ দিয়েছি। তাঁরা মেনে চলছেন।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা রেদুয়ানুল হালিম বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা মেলেনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) হাবিবুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি (স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ) কী কারণে অভিযোগ করছেন জানি না। কোনো পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে না। আমরা প্রার্থীদের অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নিচ্ছি।’