কলমাকান্দায় বন্যার পানি নেমে গেলেও দুর্ভোগ কমেনি

কলমাকান্দার বন্যার পানি নেমে গেলেও গ্রামীণ রাস্তাঘাট ভেঙে যাওয়ায় চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বুধবার উপজেলার বওড়াকোনা সড়কের খাসপাড়া এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। পাঁচ দিন ধরে জেলার প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি কমছে। তবে কলমাকান্দার উব্দাখালী নদীর পানি আজ বুধবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বিপৎসীমার এক সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

এদিকে পানি নেমে গেলেও বন্যার্ত মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। পানিতে গ্রামীণ রাস্তাঘাট ভেঙে যাওয়ায় চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কয়েকটি এলাকায় রাস্তায় পানি থাকায় যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। গবাদিপশুর খাবার সংগ্রহ নিয়েও অনেকে বিপাকে পড়েছেন।

আরও পড়ুন

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টানা ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ১৬ জুন থেকে জেলার উব্দাখালী, কংস, সোমেশ্বরী, ধনু, মগড়াসহ সব কটি নদ-নদীর পানি বাড়তে থাকে। পানি বেড়ে ১৮ জুন সন্ধ্যা থেকে কলমাকান্দার উব্দাখালী নদীর পানি ডাকবাংলো পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে। এতে কৈলাটি, বড়খাপন, পোগলা, কলমাকান্দা সদরসহ সাতটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়।

গত শুক্রবার থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় ওই দিন সন্ধ্যা থেকে বন্যার পানি কমতে শুরু করে। তবে পানি কমলেও মানুষের ভোগান্তি কমছে না বলে জানিয়েছেন পোগলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক।

আরও পড়ুন

মোজাম্মেল হক বলেন, পানি নামতে শুরু করলেও গ্রামীণ অনেক সড়ক ভেঙে স্থানে স্থানে পানি জমে আছে। কাঁচা সড়ক কাদায় একাকার হয়ে আছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ায় সহজে চলাচল করা যাচ্ছে না। অনেকেই গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। বীজতলা পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কলমাকান্দার উপসহকারী প্রকৌশলী ইমরান আহমেদ বলেন, এলজিইডির আওতায় উপজেলায় কাঁচা-পাকা মিলিয়ে ১ হাজার ৭৮ কিলোমিটার সড়ক আছে। এর মধ্যে বন্যার পানিতে কাঁচা-পাকা মিলে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার সড়ক তলিয়ে গিয়েছিল। শুক্রবার থেকে সড়কের পানি নামতে শুরু করে। সড়কের কতটুকু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা এখনো পুরোপুরি জানা যায়নি।

আরও পড়ুন

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহানারা খাতুন বলেন, উপজেলায় ১৭২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫১টি বিদ্যালয়ের মাঠ ও মেঝে বন্যার পানিতে তালিয়ে গিয়েছিল। বর্তমানে ১৯টি ছাড়া সব কটি বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে পানি সরে গেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হলেও মানুষের বাড়িঘরে তেমন বন্যার পানি ঢোকেনি। শুধু সাতটি পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছিল। কিছু রাস্তাঘাট ও বিদ্যালয়ে পানি উঠেছিল। এখন পানি সরে যাচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার্ত ব্যক্তিদের সহায়তা করা হচ্ছে।

পাউবোর নেত্রকোনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান বলেন, কলমাকান্দা ডাকবাংলো পয়েন্টে উব্দাখালী নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার এক সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, পানি দ্রুত নেমে যাবে। আর বন্যার আশঙ্কা নেই।